• তিস্তাপাড়কে দূষণমুক্ত রাখতে পিকনিকে প্লাস্টিক আটকাল প্রশাসন
    এই সময় | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়, জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ি: তিস্তাপাড়কে দূষণমুক্ত রাখতে পিকনিকের মরশুমের প্রথম দিন ২৫ ডিসেম্বর সারদাপল্লি এলাকায় প্লাস্টিক এবং থার্মকলের সামগ্রী ব্যবহারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কড়া পদক্ষেপ নিল জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। এই এলাকায় যাঁরা পিকনিক করতে এলেন, তাঁদের মাটির গ্লাস আর শালপাতার থালা ব্যবহার করানো হলো। বৃহস্পতিবার পিকনিক করতে আসা পার্টিগুলি যাতে প্লাস্টিক, থার্মকলের সামগ্রী নিয়ে তিস্তা বেডে যেতে না-পারে, তার জন্য এক নম্বর স্পারের জুবিলি পার্কের কাছে বাঁশের ব্যারিকেড লাগিয়ে চেকিং করা হয়।

    পাশাপাশি প্লাস্টিক এবং থার্মকল ব্যবহারের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে পিকনিক পার্টিগুলির মধ্যে সচেতনতা প্রচার চালান সদর ব্লক বিডিও মিহির কর্মকার। ওই জায়গায় 'সবুজ সোপান' নামে এক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টল দেওয়া হয়। যেখান থেকে শালপাতার থালা, মাটির গ্লাস স্বল্পমূল্যে পিকনিক পার্টিগুলির মধ্যে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে জানুয়ারি মাসজুড়ে জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সারদাপল্লি এলাকায় তিস্তাপাড়ে চলে পিকনিক। শহর তো বটেই, ডুয়ার্সের অন্য প্রান্ত থেকেও প্রচুর মামুষ পিকনিকে আসেন।

    প্রতিবছর প্রশাসনের পক্ষ থেকে পিকনিক পার্টিদের উদ্দেশে এই জায়গা পরিচ্ছন্ন রাখার বার্তা দেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। পিকনিকের পরেও সেখানে ফেলে রাখা হয় প্লাস্টিকের গ্লাস থেকে শুরু করে জলের বোতল, থালা প্রভৃতি। গত বছর এক নম্বর স্পার থেকে প্লাস্টিকের প্রচুর বোতল, গ্লাস, প্যাকেট স্থানীয়রাই সরিয়েছেন। এ বার তাই এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন সদর ব্লক প্রশাসন এবং খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। পিকনিকে আসা গাড়ি থেকে পার্কিং ফি নিচ্ছে পঞ্চায়েত।

    খড়িয়া পঞ্চায়েতের প্রধান কানন অধিকারী বলেন, 'ওই গাড়িগুলি থেকে সরকারি ভাবেই টাকা নেওয়া হচ্ছে। ওই টাকা তিস্তাপাড় পরিচ্ছন্ন রাখতে ব্যবহার করা হবে।' বিডিও মিহির বলেন, 'পরিবেশ রক্ষায় জেলাশাসকের নির্দেশে সারদাপল্লির এই এলাকায় প্লাস্টিক, থার্মকলের সামগ্রী নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি পিকনিকে আসা লোকেদের মধ্যে পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা প্রচার এবং শালপাতা, মাটির গ্লাস ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে।' এ নিয়ে পিকনিকে আসা লোকজন সহযোগিতা করেছেন বলে জানান তিনি। এ দিন জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় পিকনিক দলের দাপাদাপি রুখতে সক্রিয় হলো বন দপ্তর। বড়দিন উপলক্ষে গোরুমারা জঙ্গল লাগোয়া ময়নাগুড়ি ব্লকের রামসাই জলঢাকা নদীর চরে প্রচুর মানুষ পিকনিক করতে আসেন। যাঁরা জঙ্গলের খুব কাছাকাছি পিকনিক করছিলেন, তাঁদের ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দেন বনকর্মীরা।

    পিকনিকের পরে যাতে কেউ প্লাস্টিকের থালা, গ্লাস কিংবা খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলে না-রাখেন, সে জন্য মানুষকে সচেতন করা হয়। জোরে সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন দপ্তর। যে হেতু রামসাইয়ের পিকনিক এলাকাটির কাছেই বন্যপ্রাণীরা বিচরণ করে, তাই বিকেলের মধ্যে পিকনিক করতে আসা মানুষজনকে এলাকা ছাড়তে বলা হয়। গোরুমারা সাউথের রেঞ্জার ধ্রুবজ্যোতি বিশ্বাস ও রামসাইয়ের রেঞ্জার বাবলু দাস বলেন, 'বন্যপ্রাণীদের করিডরে এ দিন কাউকে পিকনিক করতে দেওয়া হয়নি।'

  • Link to this news (এই সময়)