সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মধ্যরাত পর্যন্ত বিতর্ক। ৯৮ জন সাংসদের ভাষণ। বিরোধীদের প্রবল আপত্তি। সংসদের বাইরে বিক্ষোভ। সবকিছু উপেক্ষা করে সংখ্যাবলে সংসদে ‘জি রাম জি’ বিল পাশ করিয়ে নিয়েছে মোদি সরকার। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পকে ‘গান্ধীহীন’ করার মূল উদ্দেশ্য নাকি শ্রমিকরা যাতে আরও বেশি কাজ পান সেটা নিশ্চিত করা। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলি বলছে অন্য কথা।
এই আইনের শর্ত বলছে, এবার চাইলে ১০০ দিনের কাজে সরকার ঠিকাদারদেরও যুক্ত করতে পারবে। ‘জি রাম জি’ আইনের অধীনে কোনও প্রকল্পে যদি একাধিক মন্ত্রক বা বিভাগ যুক্ত থাকে, তাহলে সমন্বয়ের জন্য বা কাজের নির্দিষ্ট অংশ সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদারদের যুক্ত করা যেতে পারে। অথচ এতদিন পর্যন্ত মনরেগার যা শর্ত ছিল, তাতে ঠিকাদাররা গোটা প্রক্রিয়ায় কোথাও অংশ নিতে পারত না। মজদূর কিষান শক্তি সংগঠন নামের এক শ্রমিক সংগঠনের নেতা বলছেন, “ঠিকাদাররা যোগ হওয়া মানেই জটিলতা বাড়বে। তাঁরা তাঁদের নিজস্ব শ্রমিকদের কাজ দেবেন। তাঁদের মুনাফার ব্যাপার রয়েছে। ফলে স্থানীয় শ্রমিকদের বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের প্রস্তাবিত আইনে মনরেগা বা MGNREGA (Mahatma Gandhi National Rural Employment Guarantee Act)-এর নাম পরিবর্তন করে বিকশিত ভারত গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন (গ্রামীণ) বা VB-G RAM-G (সংক্ষেপে জি রাম জি) করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত বিলে কাজের পরিমাণ ১০০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২৫ দিন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ ৯০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬০ শতাংশ করা হচ্ছে। এর ফলে রাজ্যগুলির উপর চাপ বাড়ছে। তাছাড়া আগে রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী, এই প্রকল্পে বরাদ্দ করা হত। এবার থেকে কেন্দ্র ঠিক করবে কোন রাজ্যে কত বরাদ্দ করা হবে। ফলে সাধারণ শ্রমিকরা ১০০ দিনের কাজ পাবেনই, তেমন কোনও নিশ্চয়তা থাকছে না। এসবের মধ্যেই প্রকাশ্যে এল ঠিকাদারদের বিষয়টিও।
উদ্বেগ আরও আছে, শ্রমিক সংগঠনগুলি বলছে, আগে শ্রমিকরা সরাসরি কেন্দ্রের কাছে বেতন পেতেন। এবার সেটা অনেকাংশে রাজ্যের উপরও নির্ভরশীল। কারণ রাজ্যকেও ৪০ শতাংশ টাকা দিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের অভাবে যৌথ প্রকল্পের টাকা দেরিতে ছাড়া হচ্ছে। এক্ষেত্রেও তেমনটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে দীর্ঘদিন আটকে থাকতে পারে শ্রমিকদের টাকা।