• ‘প্রথমে আধার কার্ড দেখতে চায়, তারপর…’! দুঃসহ অভিজ্ঞতা ওড়িশায় নিহত মুর্শিদাবাদের জুয়েলের সহকর্মীর
    প্রতিদিন | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিজেপিশাসিত ওড়িশায় (Odisha) খুন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক জুয়েল রানা। গুরুতর জখম তাঁর সহকর্মী। সেদিনের দুঃসহ অভিজ্ঞতা এখনও যেন তাঁর মনে কাঁটার মতো বিঁধছে। হাসপাতালের বেডে শুয়েই সেদিনের অভিজ্ঞতা বিড়বিড় করে বলে চলেছেন সহকর্মী মাজার খান।

    তিনি বলেন, “কিছু লোক আমাদের কাছে এল। বিড়ি চাইল প্রথমে। তারপরই আধার কার্ড দেখতে চাইল। নিমেষে জুয়েলের দিকে এগিয়ে এল। ভারী বস্তু দিয়ে চোখের সামনে মাথা থেঁতলে খুন করল ওরা।” জুয়েলের আরেক সহকর্মী নিজামুদ্দিন খানের দাবি, বাংলাদেশি ভেবে হেনস্তা করা হয় তাঁদের। নির্মম অত্যাচার করা হয়। তাতেই মৃত্যু হল জুয়েলের। মাজার এবং নিজামুদ্দিন দু’জনেই বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন। শারীরিক যন্ত্রণা তো আছেই। তার উপর মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত তাঁরা।

    মুর্শিদাবাদের সুতি ১ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা জুয়েল। কর্মসূত্রে তিনি ওড়িশার সম্বলপুরে থাকতেন। ২০ ডিসেম্বর কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ওড়িশায় (Odisha) গিয়েছিলেন জুয়েল। বুধবার রাত ৮টা ৩০ মিনিট নাগাদ জুয়েল স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে যান। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন তাঁর দুই বন্ধু। তাঁরা নিজেদের মধ্যে বাংলায় কথাবার্তা বলছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় পাঁচ দুষ্কৃতী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে নৃশংস অত্যাচার করা হয় বলে দাবি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জুয়েলের। সম্বলপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। ময়নাতদন্তের পর কফিনবন্দি দেহ সুতিতে পৌঁছেছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার। তৃণমূলের তরফে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। X হ্যান্ডেলে পোস্টে বলা হয়, ‘‘বিজেপির বাংলাবিরোধী প্রচারের প্রত্যক্ষ ফলাফল ওড়িশার এই হত্যা। ভারতের এক জন নাগরিককে পিটিয়ে হত্যা করা হল কারণ, উন্মত্ত জনতা মনে করেছে বাঙালি মানেই অনুপ্রবেশকারী। অনবরত তাঁদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিয়ে যেতে হবে।’’এই দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে ওড়িশা পুলিশ। তাদের ব্যাখ্যা, বাংলা বলার কারণে বা বাংলাদেশি সন্দেহে নয়। বিড়ি নিয়ে বচসার জন্য বাংলার পরিযায়ী শ্রমিককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)