সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি: ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছিল নতুন জিএসটি হার। অর্থাৎ উৎসবের মরশুমের প্রাক্কালে। নভেম্বর মাসে বলা হয়েছিল জিএসটি কমে যাওয়ার জেরে রেকর্ড বেড়েছে পণ্য বিক্রি। ৬ লক্ষ কোটি টাকার আদানপ্রদান হয়েছে নবরাত্রি থেকে দীপাবলি পর্যন্ত সময়সীমায়। স্বাভাবিকভাবেই মনে করা হচ্ছিল আর্থিক আদানপ্রদান, পণ্য ক্রয়বিক্রয়ের প্রবণতা বৃদ্ধির সুখবর স্থায়ী হতে চলেছে। কিন্তু দীপাবলির পর থেকে শীতকালীন আর্থিক লেনদেনের হিসাবে ফের নিরাশা দেখা দিয়েছে। আর্থিক বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিক শেষ হতে চলেছে। এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর মাসের সময়সীমার মোট বাণিজ্য গতিপ্রকৃতি থেকে জানা যাচ্ছে, পণ্য ক্রয় আদতে সামগ্রিকভাবে কমে গিয়েছে। গ্রীষ্মকালে এয়ারকন্ডিশনিং মেশিন কম বিক্রি হয়েছিল।ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে একাধিক সমীক্ষক সংস্থা, পি এল ক্যাপিটাল, ক্যাবজিমিনি, ডেলয়েটের মতো সংস্থার সমীক্ষায় উঠে এসেছে, সারা বছরেই এয়ার কন্ডিশনিং মেশিন বিক্রি দেশজুড়ে ধাক্কা খেয়েছে। একইভাবে রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন,অন্য ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেটস বিক্রিও কমেছে। সবথেকে উদ্বেগজনক প্রবণতা হল স্মার্টফোন বিক্রি কমে যাওয়া। গাড়ি এবং স্মার্ট ফোন, এই দুই পণ্যের ক্ষেত্রে একটি সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেটি হল, তুলনামূলকভাবে যা সস্তার অর্থাৎ এন্ট্রি লেভেল প্রোডাক্ট বিক্রি হচ্ছে না। অর্থাৎ যারা প্রথমবার স্মার্ট ফোন কিনছে কিংবা প্রথম গাড়ি কিনছে, সেই নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ক্রয় কমিয়ে দিয়েছে। ৭ থেকে ১৪ হাজার টাকার স্মার্ট ফোন বিক্রি কমে গিয়েছে। একইভাবে ৭ লক্ষ টাকার মধ্যে থাকা গাড়ির বিক্রিও কম। দামি গাড়ি-ফোন বিক্রি কমবেশি একইরকম আছে। উত্তর ভারতে বিক্রি সবথেকে ধাক্কা খেয়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী ২৫ শতাংশ কমেছে উত্তর ভারতের পণ্যবাবদ মুনাফার হার। কমবেশি প্রতিটি এফএমসিজি কোম্পানির তৃতীয় ত্রৈমাসিকের ফলাফল আসার পর সামগ্রিক চিত্র স্পষ্ট হবে। তবে মনে করা হচ্ছে, কমবে পণ্যবিক্রির গ্রাফ ও মুনাফার হার। সেই আভাস পাওয়া গিয়েছে। এই প্রবণতার মধ্যে সবথেকে উদ্বেগজনক হল গ্রামীণ অর্থনীতির আর্থিক আদান প্রদান কমে যাচ্ছে। শহরে কাজের সুযোগ কমলে সাধারণত এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। অর্থাৎ পরিযায়ী শ্রমিক শহরে ভালো কাজ পেলে সেই টাকা গ্রামে পাঠায় পরিবারকে। সেক্ষেত্রে গ্রামীণ এলাকায় পণ্য বিক্রি বেড়ে যায়। সেই প্রবণতায় ছেদ পড়েছে।