• ট্রেন লেট, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওয়েটিং লিস্ট! অপেক্ষা তালিকা শূন্যে নামাতে লাগবে আরও ৬ বছর, চিন্তায় কেন্দ্র
    বর্তমান | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: কোটি কোটি টাকায় কেনা ‘ফগ ডিভাইস’ কার্যত জলে গিয়েছে। কুয়াশার দাপটে মাত্রাছাড়া ট্রেন লেটে নিত্যদিন জেরবার আম জনতা। তবে ভোগান্তি শেষ এখানেই হচ্ছে না। দূরপাল্লার মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনে কনফার্মড টিকিট পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ রেল যাত্রীদের। ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে ট্রেনের ওয়েটিং লিস্টের তালিকা। ফলে নতুন বছরেও রেল পথে সপরিবারে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনায় রাশ টানতে হচ্ছে আম জনতাকে। অপেক্ষমান রেল যাত্রীদের নিশ্চিত সংরক্ষিত আসন দিতে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে মন্ত্রককে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের অসন্তোষও। রেল যাত্রীদের বড় অংশের প্রশ্ন, ভাড়া বৃদ্ধি পেলেও রেল কেন ঠিকমতো পরিষেবা দিতে পারছে না? এই পরিস্থিতিতে আরও বেআব্রু হয়ে পড়ছে রেল বোর্ডের সামগ্রিক অবস্থা। কারণ রেলের সাম্প্রতিক একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, দূরপাল্লার ট্রেনে ওয়েটিং লিস্ট একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনতে অন্তত ছ’বছর লাগবে। অর্থাৎ, ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও ট্রেনে টিকিট না পাওয়ার ইস্যুই অস্ত্র হতে চলেছে বিরোধী দলগুলির। 

    এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রেনের ‘ক্যাপাসিটি’ বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করতে চলেছে কেন্দ্র। রেল সূত্রে খবর, মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী ভিড় সামাল দিতে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের মোট ৪৮টি শহরে ট্রেনের পরিচালন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে প্রায় দ্বিগুণ করা হবে। এই ৪৮টি শহরের মধ্যে থাকছে কলকাতাও। পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পাশাপাশি কলকাতা মেট্রোকেও এহেন পরিকল্পনায় শামিল করানো হচ্ছে। গোটা বিষয়টিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রেল বিশেষজ্ঞ মহল। তাদের ব্যাখ্যা, ২০৩০ সালের মধ্যে ‘ক্যাপাসিটি’ দ্বিগুণ করার টার্গেট নেওয়া হচ্ছে। তার দু’বছরের মধ্যে ওয়েটিং লিস্ট শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হচ্ছে।

    ‘ওয়েটিং লিস্ট’ শূন্য হয়ে যাওয়ার অর্থ হল, দূরপাল্লার প্রতিটি মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনে প্রত্যেক রেল যাত্রী সংরক্ষিত শ্রেণিতে নিশ্চিত আসন পাবেন। রেলে কনফার্মড টিকিট না পাওয়ার বাস্তব পরিস্থিতি এই মুহূর্তে ঠিক কী? শুক্রবার সন্ধ্যায় দেখা যাচ্ছে, কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় ট্রেন দার্জিলিং মেলের স্লিপার ক্লাসে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোনও টিকিট নেই। দার্জিলিং মেলের থার্ড এসিতেও জানুয়ারি পর্যন্ত কনফার্মড টিকিট পাওয়া যাবে না। আবার কলকাতা থেকে নর্থ বেঙ্গল যাওয়ার আরও এক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের স্লিপার এবং থার্ড এসিতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোনও টিকিট নেই। দিল্লি থেকে কলকাতা যেতে হাওড়া রাজধানী বা শিয়ালদহ দুরন্ত এক্সপ্রেসে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত কোনও টিকিট নেই। কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার বা দিল্লি থেকে কলকাতা যাওয়ার বাকি ট্রেনগুলিতেও কমবেশি একই দশা। অন্যান্য রুটের ছবিটাও কমবেশি একই রকম। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ওয়েটিং লিস্টের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে!
  • Link to this news (বর্তমান)