১৯৯১ ছিল উদারীকরণের বছর, ২০২৫ নিয়ন্ত্রণমুক্তির বর্ষ: কেন্দ্র
বর্তমান | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
নয়াদিল্লি: ১৯৯১ সাল যদি উদারীকরণের বছর হয়, তাহলে ২০২৫ সাল হল নিয়ন্ত্রণমুক্তির বর্ষ। ব্যবসার পরিবেশ সহজ করার গণ্ডি ছাড়িয়ে চলতি বছরে ব্যবসার পরিসরকে মুক্ত করার উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে ভারত। শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই দাবি করা হল।
এদিন কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত দশকের গোড়ার দিকে ভারতে ব্যবসার পরিবেশ ছিল হার্ডল রেসের শামিল। কেবল নির্মাণকাজের অনুমতি পাওয়ার নিরিখে ১৯০টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ছিল ১৮৪ নম্বরে। শুধুমাত্র অনুমতি পাওয়ার জন্যই লেগে যেত ১৮৬ দিন। বহু দশক ধরে চলে আসা বাড়তি নিয়ন্ত্রণের ফাঁস ও তার জেরে ব্যবসায়ী মহলে তৈরি হওয়া গভীর অবিশ্বাসের ফলেই তৈরি হয়েছিল ওই পরিস্থিতি। কিন্তু সেই ভাবমূর্তি কাটিয়ে ওঠার নেপথ্যে দীর্ঘ ১১ বছরের অবিরাম পরিশ্রম রয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, ইতিবাচক ও গঠনমূলক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে একঝাঁক পদক্ষেপ। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র মাধ্যমে উৎপাদন ক্ষেত্রকে উৎসাহিত করা হয়েছে। ব্যবসার সম্প্রসারণ আর জরিমানার মুখে পড়ে না, ব্যবসায়িক বৃদ্ধিকে আর সন্দেহের চোখে দেখা হয় না। ‘স্মল কোম্পানিজ’-এর সংজ্ঞা বদল করে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেন করা সংস্থাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এফডিআই-তে উল্লেখযোগ্য সংস্কার ঘটিয়েছে সরকার। ভারতীয় বিমা কোম্পানিগুলিতে ১০০ শতাংশ এফডিআই-এর অনুমোদন দিয়েছে। এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদেশি মূলধন আসবে, প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে এবং ভারতের ক্রমবর্ধমান বিমা বাজারে গ্রাহক পরিষেবার উন্নতি হবে। এই নিয়ন্ত্রণমুক্তি শুধুমাত্র সরকারির মন্ত্রকগুলির মধ্যে সীমাবন্ধ নেই। সেখানে শামিল হয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও সেবি। এক বছরে তিনটি বড় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। ২০২৫ সালেই ব্রিটেন, ওমান ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করেছে ভারত। পাশাপাশি বাধামুক্ত হয়েছে দেশের বন্দরগুলির। ২০২৫ সালে গ্রামীণ উন্নয়নে লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। এক্ষেত্রে বিকশিত ভারত জি রাম জি বিল, ২০২৫ রোজগার গ্যারান্টি কাঠামোর মাধ্যমে কাজের গ্যারান্টির সীমা ১০০ থেকে বাড়িয়ে বছরে ১২৫ দিন করা হয়েছে। পাশাপাশি সংসদে পাশ হয়েছে এসএইচএএনটিআই (সাসটেনেবল হার্নেসিং অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব নিউক্লিয়ার এনার্জি ফর ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়া) বিল। কেন্দ্রের দাবি, এটা ঐতিহাসিক। কারণ, এই প্রথম ভারত একচেটিয়া মডেলের পরমাণু নীতি থেকে সযত্নে নিয়ন্ত্রিত সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েও বিনিয়োগবান্ধব কাঠামোয় দিকে অগ্রসর হচ্ছে। মোদি সরকারের বক্তব্য, প্রত্যেকটি আন্তর্জাতিক পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে ভারতীয় অর্থনীতি ২০২৫-এ দেখিয়েছে ৮.২ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির সাহস। ঐতিহাসিক সংস্কার, যা ঘটেছে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে যেমন – জিএসটি ও আয়কর ব্যবস্থা থেকে শ্রম সংস্কার, বন্দরের আধুনিকীকরণ থেকে পারমাণবিক শক্তি, এফডিআই থেকে এফটিএ। পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য নিয়ন্ত্রণ হ্রাসের মাধ্যমে অর্থনীতি পেয়েছে নতুন জীবন।