প্রীতেশ বসু, কলকাতা: ফুটবল তারকা লায়োনেল মেসির অনুষ্ঠানকে ঘিরে বিশৃঙ্খলার সাক্ষী থেকেছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। ১৩ ডিসেম্বরের ঘটনায় ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় এই ক্রীড়াঙ্গনে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় স্টেডিয়ামের পরিকাঠামোর। এই ঘটনার তদন্ত চলাকালীনই ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন শুরু করে রাজ্য সরকার। মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজ্য পূর্তদপ্তরকে। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশের অনুমতি ছাড়া মেরামতির কাজে শুরু করা যায়নি। সূত্রের খবর, সম্প্রতি পুলিশের তরফে রাজ্য সরকারকে মেরামতি শুরু করার ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে খুব শীঘ্রই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হবে বলেও প্রশাসনিক মহল সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঘটনার দিনে মেসিকে দেখতে না পেয়ে স্টেডিয়াম ভাঙচুর চালায় দর্শকদের একাংশ। দর্শকদেরই বসার বহু বাকেট চেয়ার ভেঙে ফেলা হয়। এমনকি স্টেডিয়ামের বেশকিছু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় লোহার গ্রিল। খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে যাওয়ার রাস্তার উপরের ছাদও অল্প বিস্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলেই জানা গিয়েছে। এছাড়াও অনেককে দেখা গিয়েছে ফুলের টব থেকে শুরু করে মাঠে পাতার ম্যাটও কাঁধে করে নিয়ে যেতে।
ওইদিনের বিশৃঙ্খলার পূর্ণাঙ্গ তদন্তে নামে পুলিশ। সেই তদন্ত তদারকি করার জন্য পদস্থ পুলিশ কর্তাদের নিয়ে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল বা এসআইটি গঠন করে রাজ্য। এছাড়াও ঘটনার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের নন্দিনী চক্রবর্তীকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙচুরের ঘটনায় ইতমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। তবে তদন্তের শুরুতেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক দল। তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই মেরামতির কাজ শুরুর ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে। যা হাতে পেয়েই পুনর্গঠনের কাজ নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে আলোচনাও শুরু হয়েছে।
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনটি ক্রীড়াদপ্তরের অধীন। আগাগোড়াই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজের দায়িত্ব পূর্তদপ্তরকেই দিয়ে থাকে ক্রীড়াদপ্তর। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে করছে আমলা মহল। আর যেহেতু ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পূর্তদপ্তরকে, সেই কারণে তাদের পক্ষে মেরামতির কাজও দ্রুত সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে বলেও তারা মনে করছে। -ফাইল চিত্র