• ভোট-দামামা অভিষেকের, ঘোষণা জোড়া কর্মসূচির
    বর্তমান | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ছাব্বিশের ভোট যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অভিষেক ঘোষণা করলেন জোড়া কর্মসূচির। ১৫ বছরে রাজ্য সরকারের উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে এবার তৃণমূল কর্মীরা পৌঁছবেন আমজনতার দুয়ারে। বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিষেকের প্রশ্ন, ‘তোমাদের রিপোর্ট কার্ড কোথায়? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ১৫ বছরের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশিত করেছে। কিন্তু বিজেপি বাংলার জন্য কী করেছে, তার হিসেব কোথায়?’

    শুক্রবার জনপ্রতিনিধি, দলীয় পদাধিকারীদের নিয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সাংগঠনিক বৈঠক করেন অভিষেক। ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। এই বৈঠকেই উঠেআসে ২০২৬ সালের বিধানসভানির্বাচনের প্রস্তুতির রোডম্যাপ। সম্প্রতি বাংলায় ভোট প্রচারে এসেপ্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আওয়াজ তুলেছেন, ‘বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই।’যার জবাব স্লোগানের মাধ্যমে দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে স্লোগান দিয়েছেন, তার  মধ্যে অনেক ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে। বাঁচতে চাই বলতে বুঝিয়েছেন, মারতে চায়। তাই আমরা বলব, বাঁচতে চাই, তাই বিজেপি বাই।’

    ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি স্লোগান দিয়েছিল, ‘আব কী বার ২০০ পার।’ কিন্তু ২০০ আসন তো দূরের কথা, বিজেপি ১০০-তেও পৌঁছতে পারেনি। তৃণমূলের ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ স্লোগানে গলা মেলায় তামাম রাজ্য। মমতার প্রতি সমর্থন উজাড় করে দেন শহর থেকে গ্রাম বাংলার মানুষ। সেই জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে অভিষেকের প্রত্যয়ীবার্তা, ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা, এজেন্সির দাপাদাপি, এসআইআর-র সব চক্রান্ত ব্যর্থ হবে আবার। মানবে না হার, মা-মাটি-মানুষের সরকার আবার।’

    বাংলার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বিজেপিকে ‘টাটা-বাই বাই’ করাতে একগুচ্ছ দলীয় পদক্ষেপ এবং কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। একটি কর্মসূচি হল, ‘বাংলার সমর্থনে সংযোগ।’ এই কর্মসূচি শুরু হবে ১ জানুয়ারি থেকে। ৩৮টি টিম গঠন করা হবে। তাঁরা পৌঁছবেন সমাজের বিশিষ্ট ১৮০০ মানুষের কাছে। বিভিন্ন পেশায় খ্যাতিসম্পন্ন এবং সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তির কাছে তৃণমূলের তরফে একটি শুভেচ্ছা বাক্স পাঠানো হবে। সেখানে থাকবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা চিঠি। ১৫ বছরের তৃণমূল সরকারের রিপোর্ট কার্ড। সমাজের ওই বিশিষ্ট ব্যক্তিকে উত্তরীয় এবং স্মারক দিয়ে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হবে। জনপ্রতিনিধি এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরা আগামী ১৫-৩০ দিনের মধ্যে এই কাজ করবেন।

    অন্যদিকে ‘উন্নয়নের সংলাপ’ নামে তৃণমূলের তরফে দ্বিতীয় একটি কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আগামী দেড় মাসের এই কর্মসূচি। যেখানে ধর্মীয় স্থান পরিদর্শন, পাড়া বৈঠক, পথসভা, মিছিল, কর্মীর বাড়িতেদুপুরের খাওয়া দাওয়া এবং সন্ধ্যায় এলাকার মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ। এই পর্বে ৪৫ মিনিটের এক ভিডিও প্রদর্শিত হবে। রাজ্যের উন্নয়নের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হবে। দুটি কর্মসূচি সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য তৃণমূলের তরফে জেলাভিত্তিক ‘কো-অর্ডিনেটর’ পদ তৈরি করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, অনেকদিন আগেই তৃণমূলে জেলা পর্যবেক্ষক পদ উঠে গিয়েছে। অভিষেক বলেছেন, তৃণমূলের যে কর্মীরা সাধারণ মানুষের কাছে যাবেন, তাঁরা মনে রাখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে যাচ্ছেন। তাই ঔদ্ধত্য, অহঙ্কার, আত্মতুষ্টি কোনওভাবেই যেন না থাকে। এটা মনে রাখতে হবে ২০২৬ সালের ভোট, ২০২৯ সালের ভিত রচনা করবে।
  • Link to this news (বর্তমান)