• ভোটার কেন বাদ, কারণ দর্শাবেন ইআরও
    বর্তমান | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আজ, শনিবার রাজ্যজুড়ে শুরু হচ্ছে এসআইআরের শুনানি পর্ব। ঠিক কতজন ভোটারের নাম চূড়ান্ত ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বে, তা নিশ্চিত হবে শুনানির মাধ্যমেই। আর শুনানি শুরুর আগেই রাজ্যজুড়ে সমস্ত ইআরওকে কমিশনের নির্দেশ, কোনও ভোটারকে যোগ্য বা অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত করলে, তার কারণ দর্শাতে হবে তাঁদেরই। ‘ইসিআইনেট’-এ লিখিতভাবে সেই কারণ উল্লেখ করতে হবে ইআরওদের। 

    ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজের বা কোনও আত্মীয়র নাম না থাকা ভোটার এবং কমিশনের খাতায় সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিতদের শুনানিতে ডাকা হচ্ছে। আগেই এই ভোটারদের কাছ থেকে নথি সংগ্রহ করে বুথ লেভেল অফিসারদের অ্যাপ মারফত তা আপলোডের নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। কমিশনের আরও নির্দেশ ছিল, পাঁচদিনের মধ্যে ওই যাবতীয় নথি যাচাইয়ের কাজ সেরে ফেলতে হবে ইআরওদের। যাচাই পর্বে ভোটারদের থেকে প্রাপ্ত কোনও নথি সম্পর্কে সন্দেহ থাকলে, সেগুলি পৃথক করে রাখার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। পরবর্তীতে সেই সন্দেহভাজন নথিগুলি নিয়ে শুনানি পর্বে ভোটারের থেকে উপযুক্ত উত্তর না মিললে স্বতঃপ্রণোদিত তদন্ত করতে হবে ইআরওদের। এমনকি, দ্বিতীয়বারের জন্য ভোটারকে সুযোগ দিতে হবে। আর তারপরও সংশ্লিষ্ট ভোটারকে ‘অযোগ্য’ বলে মনে হলে তাঁর নাম বাতিল করতে পারবেন ইআরও। আর কেন ওই ভোটারকে অযোগ্য বলে বিবেচিত করা হল, সেই সমস্ত তথ্য লিখিতভাবে জানাতে হবে কমিশনকে। একইভাবে কোনও ভোটার কমিশন নির্ধারিত নথির মধ্যে যে কোনও একটি দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে, তাঁর নাম চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় থাকবে। সংশ্লিষ্ট ভোটারের দেওয়া যে নথিকে ইআরও গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত করছেন, সেটি যে আইন অনুযায়ী যথোপযুক্ত, তাও ইসিআইনেটের মাধ্যমে লিখিতভাবে জানাতে হবে তাঁদের। 

    কমিশনের এহেনও নির্দেশের প্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, কোনও অযোগ্য ভোটার চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলে ইআরওরা যাতে দায় এড়াতে না পারেন, সেজন্যই এমন নির্দেশিকা। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, একাধিক জীবিত ভোটার তালিকায় ‘মৃত’। এসব ক্ষেত্রে কমিশন বিএলওদের ঘাড়েই বন্দুক চাপিয়েছে। আর এবার এমন নির্দেশিকা জারি করে ইআরওদের বুঝিয়ে দেওয়া হল, চূড়ান্ত তালিকায় ভুল থাকলে তাঁরাও দায় এড়াতে পারবেন না। 

    আজ থেকে শুনানির জন্য রাজ্যজুড়ে ৩ হাজার ২৩৪টি কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। মোট তিন থেকে চারজনের তত্ত্বাবধানে হবে হিয়ারিং। থাকবেন ইআরও, এইআরও, মাইক্রো অবজার্ভার। কোনও কোনও জায়গায় বিএলও সুপারভাইজারও। শুনানিতে কার্যত সিসি ক্যামেরার ভূমিকা পালন করবেন মাইক্রো অবজার্ভাররা। তবে শুনানির আগেই বেঁকে বসেছেন একাধিক মাইক্রো অবজার্ভার। দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে অনেকেই দরবার করেছেন সিইও অফিসে। যদিও কমিশন সূত্রে খবর, প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে ১১ জন করে মাইক্রো অবজার্ভার থাকার কথা। সেই হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য মাইক্রো অবজার্ভার প্রয়োজন ৩,২৩৪ জন। বাড়তি অনেক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে রাখা হয়েছে। ফলে অসুবিধা হবে না। 

    অন্যদিকে, রাজ্যজুড়ে আজ শনিবার থেকে শুনানি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুক্রবারই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা ও ডায়মন্ডহারবার বিধানসভার ২৬টি বুথ দিয়ে শুরু হয়েছে শুনানি পর্ব। ডায়মন্ডহারবার দু’নম্বর ব্লক অফিস এবং একটি সরকারি স্কুলে হিয়ারিং হয়েছে এদিন। সব মিলিয়ে ১৭০ থেকে ১৭৫ জন ভোটারকে ডাকা হয়েছিল। তার মধ্যে ১২০ থেকে ১২৫ জন এসেছিলেন। আটজন এইআরও এই শুনানি করেছেন। তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে একজন মাইক্রো অবজার্ভার উপস্থিত ছিলেন।
  • Link to this news (বর্তমান)