• শুনানিতে ডেকে বিলম্ব, হুইলচেয়ারে দীর্ঘ প্রতীক্ষা
    আজকাল | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি: খসড়া তালিকায় নাম নেই। ডাকা হয়েছিল শুনানিতে। শনিবার হুগলির চণ্ডীতলা ২ নম্বর ব্লক বিডিও অফিসে পৌঁছে সকাল আটটা থেকে নিজের হুইলচেয়ারে দীর্ঘ সময় বসে কাটালেন প্রৌঢ় সাহিদ মণ্ডল। 

    তাঁর বাড়ি ডানকুনি পুরসভার ১নং ওয়ার্ডের চাকুন্দিতে। শারীরিক অক্ষমতার কারণে হাঁটাচলা করতে পারেন না তিনি। ভোটার কার্ড থাকলেও শাহিদ মণ্ডলের নাম খসড়া তালিকায় না থাকায় তাঁকে ডাকা হয়েছিল শুনানিতে। স্ত্রী আজমিরা বেগম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। 

    নিজের প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে সকাল থেকে বিডিও অফিসে হুইলচেয়ারে বসে শুনানির অপেক্ষা করেন সাহিদ। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁর শুনানি শুরু হয়। প্রয়োজনীয় নথি দেখে হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় প্রৌঢ়কে। 

    এদিকে বাঁকুড়া থেকে তারকেশ্বরে শুনানিতে এসে হয়রানির শিকার ৮০ বছরের ঊর্ধ্বের এক বৃদ্ধা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর ডাকা হল শুনানিতে। প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগীতার অভিযোগ তুলল তাঁর পরিবার। শুনানি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল। 

    তারকেশ্বরের মুক্তারপুরের বাসিন্দা আরতি রাহা। ভোটার কার্ড অনুযায়ী বয়স ৮১ বছর। স্বামী ভগবান চন্দ্র রাহা ছিলেন কামারপুকুর শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা বিদ্যামহাপীঠের অধ্যাপিকা। সেই কারণেই দীর্ঘ কয়েক বছর আরামবাগ ও গোঘাট বিধানসভা এলাকায় বসবাস করতেন। পরবর্তীকালে তারকেশ্বরের মুক্তারপুর এলাকায় তাঁর বড় মেয়ে শিক্ষিকা কেয়া রাহার কাছে বসবাস করতেন। 

    কিন্তু ২০২৪ সালে ২৪ নভেম্বর আরতী রাহার স্বামীর মৃত্যু হয়। তার কয়েকদিন পর ২০২৫ সালে জানুয়ারি মাসে বড় মেয়ে কেয়া রাহার মৃত্যু হয়। তারপর থেকে তিনি বাঁকুড়ায় তাঁর ছোট মেয়ে কাকলি রাহার কাছে বসবাস করতেন। হাই প্রেসারে রোগী। শরীরে বসানো পেস মেকার। হাইপার টেনশনে ভোগেন বৃদ্ধা আরতি রাহা। 

    শনিবার সকালে গাড়িতে দীর্ঘ ১৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তারকেশ্বর ব্লক অফিসে উপস্থিত হন। নির্বাচন কমিশন থেকে তিনি শুনানির নোটিশ পেয়েছিলেন। এদিন তাঁর সঙ্গী ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে কাকলি রাহা। 

    কাকলি বলেছেন, মায়ের একাধিক শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে। ভাল করে কথা মনে রাখতে পারেন না। সব ভুলে যান। তাই ২০০২ সালের সঠিক কোন জায়গায় ভোট দিয়েছেন সেটা তাঁর মায়ের মনে নেই। সেই কারণে এসআইআর ফর্মে ২০০২ সালের তথ্য আপলোড করা যায়নি। তাই নির্বাচন কমিশন থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। 

    তাঁর দাবি, 'আমরা এখানকার বাসিন্দা। আমরা সচেতন মানুষ। আমরা অবশ্যই নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করব। আমরা অবশ্যই চাই এসআইআর হোক। বৈধ ভোটার থাকুক।' তাঁর মা ট্রমার মধ্যে আছেন। কিছু করার নেই। কিন্তু ফোন করে অনুরোধ করে হয়েছিল, তাঁকে একটু আগে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কারণ উনি অসুস্থ মানুষ। কিন্তু অসযোগীতা পেল পরিবার। 

    তিনি জানিয়েছেন, 'আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। কিন্তু অসযোগীতা পাচ্ছি। তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ এইধরনের বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষদের জন্য কিছু করা হোক।' আরতি রাহা বলেছেন, 'আগের কোনও কথা মায়ের মনে নেই। খুব কষ্ট হচ্ছে।'
  • Link to this news (আজকাল)