এই সময়, কলকাতা ও বহরমপুর: মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় হুমায়ুন কবীর 'বাবরি মসজিদে'র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। এই হুমায়ুনই আবার ২০১৯-এ বিজেপির হয়ে ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন। এখন তিনিই কী ভাবে 'বাবরি মসজিদ'-এর কথা বলছেন, গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার সময়ে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কথা হুমায়ুনের খেয়াল ছিল না- এই প্রশ্ন তুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভরতপুরের বিধায়ক নতুন দল তৈরি করলেও সেই দলকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। হুমায়ুনের 'বাবরি মসজিদ' নির্মাণ নিয়ে জাতীয় সংবাদমাধ্যমের একাংশ প্রবল হইচই শুরু করেছে। হুমায়ুনের আচমকা এই প্রচারের শিরোণামে উঠে আসা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শনিবার তৃণমূল ভবনে অভিষেক বলেন, 'আপনাকে যদি মন্দির-মসজিদের রাজনীতি করতে হয়, তা হলে বিজেপির সঙ্গে পার্থক্য কী রয়েছে? বিজেপি মন্দির তৈরির রাজনীতি করছে। আপনি মসজিদ তৈরির রাজনীতি করছেন। এই হুমায়ুন ২০১৯-এ বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। ১৯৯২-এ বাবরি মসজিদের ঘটনা ঘটেছিল। যে দল বাবরি মসজিদ ভেঙেছিল, সেই দলের প্রার্থী হতে আপনি দিল্লি গিয়েছিলেন- এটা তখন আপনার খেয়াল ছিল না?'
কোনও রাজনৈতিক নেতা ধর্মীয় স্থান নির্মাণ করতে গেলে তাঁর রাজনীতি ছেড়ে সেটা করা উচিত বলেও অভিষেকের পর্যবেক্ষণ। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতার ব্যাখ্যা, 'মন্দির-মসজিদ নির্মাণ করার অধিকার সবার রয়েছে। মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, চার্চ তৈরি করুন। কিন্তু রাজনীতি ছেড়ে দিন। রাজনীতি করলে জনতার সেবা একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত। স্কুল, হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় বানান। ধর্ম পালন নিজের ঘরে বসে করুন। একজন নেতাকে মন্দির-মসজিদ নিয়ে রাজনীতি করা শোভা পায় না।'
হুমায়ুন 'জনতা উন্নয়ন পার্টি' নামে দল ঘোষণা করলেও অভিষেক তাকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁর কথায়, 'আপনি যদি মনে করেন আমি একজন নেতা, আমি তৃণমূলকে হারাতে পারি, আপনার অধিকার রয়েছে পার্টি তৈরি করে জিতে আসুন।' হুমায়ুন দল ঘোষণার পরে কংগ্রেস অথবা সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতার বার্তা দিলেও এই দুই দল পাত্তা দেয়নি ভরতপুরের বিধায়কের আহ্বানকে। এই পরিস্থিতিতে এ দিন হুমায়ূন বলেছেন, 'এখনও পর্যন্ত যা কথা হয়েছে, তাতে আইএসএফ এবং মিম-এর সঙ্গে জোট নিশ্চিত।'
যদিও হুমায়ুনের এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, 'এই বিষয়ে (হুমায়ুন) তাঁর সঙ্গে আমার অথবা আমার দলের রাজ্য সম্পাদকের সঙ্গে কোনও কথাই হয়নি। হুমায়ুন কী বলছেন, সেটা তিনিই বলতে পারবেন।' হুমায়ুনের দাবি নিয়ে তৃণমূলের বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, 'ওঁকে (হুমায়ুন) নিয়ে আমরা ভাবছি না। ওঁর সব কথার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন নেই।'