বিশেষ সংবাদদাতা, আগরতলা: গত কয়েকদিনে কেরল ও ওড়িশায় গণপিটুনিতে খুনের ঘটনা সামনে এসেছে। বাংলা ভাষায় কথা বলায় ওড়িশায় খুন করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের এক পরিযায়ী শ্রমিককে। কেরলে বাংলাদেশি সন্দেহে পিটিয়ে মারা হয় ছত্তিশগড়ের এক দলিত শ্রমিককে। এবার বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডের দেরাদুন। সেখানে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যের প্রতিবাদ করে প্রাণ গেল ত্রিপুরার এমবিএ পড়ুয়ার। নাম অ্যাঞ্জেল চাকমা (২৪)। গত ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রড ও ছুরি দিয়ে হামলা চালানো হয় তাঁর উপর। গত শুক্রবার মৃত্যু হয় অ্যাঞ্জেলের। ঘটনায় উত্তরাখণ্ড পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে।
অ্যাঞ্জেলের ভাই মিশেলও ঘটনায় জখম হয়েছেন। দেরাদুনের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া দুই ভাই ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সেলাকুইতে বাজার করতে গিয়েছিলেন। হঠাৎই অপরিচিত কয়েকজন যুবক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাঁদের গালিগালাজ করতে থাকে। একসময় তারা বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করলে অ্যাঞ্জেল প্রতিবাদ করেন। এরপরই মদ্যপ দুষ্কৃতীরা অ্যাঞ্জেলের মাথায় ও পেটে প্রায় ১৭ বার ছুরি ও রড দিয়ে আঘাত করে। দাদাকে বাঁচাতে মিশেল এগিয়ে এলে তাঁর মাথাতেও আঘাত করা হয়। আহত অবস্থায় দুজনকেই স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শুক্রবার ভোররাতে মৃত্যু হয় অ্যাঞ্জেলের। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত পড়ুয়ার মাথার আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মিশেলের দাবি, হামলাকারীরা তাঁদের দুই ভাইকে অবমাননাকর মন্তব্য করতে থাকে। উত্তরাখণ্ড পুলিস জানিয়েছে, এপর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নাম, অবিনাশ নেগী, সূর্য রাজপুত, সুরজ খাউয়াস, আয়ুশ বাদুনি, সুমিত। যশ নামে এক অভিযুক্ত ফেরার।
অ্যাঞ্জেল আগরতলার দেবরামপাড়ায় থাকতেন। উত্তর ত্রিপুরা জেলার পেঁচারথলে তাঁর বাড়ি। তাঁর মরদেহ বিমানে করে আগরতলায় নিয়ে আনা হবে। তারপর পৈতৃক গ্রামে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, অ্যাঞ্জেলের বাবা বিএসএফ কর্মী। বর্তমানে মণিপুরে কর্মরত। পরিবারের লোকজন দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনও ওই হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ করেছে।