• এসআইআর: তিন কোটি ভোটার বাদ পড়তে চলেছে উত্তরপ্রদেশে, বেছে বেছে নাম খারিজের অভিযোগ বিরোধীদের
    বর্তমান | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি জনসংখ্যা। তার মধ্যে কমবেশি ৩ কোটি ভোটারের নাম বাদ পড়তে চলেছে উত্তরপ্রদেশে। ১ কোটি ১১ লক্ষ ভোটার সন্দেহজনক। তাদের নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশে সমাপ্ত হয়েছে ইনিউমারেশন ফর্ম জমা নেওয়া। ৩১ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। গোটা দেশে বিহারের পর আরও ১২টি রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধন পর্বের স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) হচ্ছে, তার মধ্যে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে ভোটারের নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাব্য পরিসংখ্যান বিস্ময়করভাবে বেশি। ৩ থেকে ৪ কোটি সন্দেহজনক ভোটারের সম্ভাব্য সংখ্যা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। প্রায় ৩ কোটি ভোটার বাদ যাওয়ার মধ্যে সিংহভাগ স্থানান্তরিত, মৃত, ডুপ্লিকেট বলা হচ্ছে। কিন্তু তারপরও বাদ যাওয়া বিপুল সংখ্যক ভোটারের নাম নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতাসীন হয়েছেন প্রথমবার। ২০২২ সালে আবার ক্ষমতাসীন হয়েছেন। ২০১৪ থেকে বিজেপি এই রাজ্যে লোকসভা আসনের সিংহভাগ দখল করার পর এসআইআর নিয়ে কোনও উদ্যোগ ছিল না। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের পর যখন উত্তরপ্রদেশে বিজেপি অপ্রত্যাশিতভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে এবং কেন্দ্রেও ২৪০ আসনে আটকে যায়, তারপরের বছরই এসআইআর নিয়ে মরিয়া হয়ে ঝাঁপিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবের অভিযোগ, ৩ কোটি নাম বাদ যাওয়ার সঙ্গে সুপরিকল্পিত চক্রান্ত আছে। আর এই তালিকায় দলিত, মুসলিম, গরিবের সংখ্যা‌ই ঩সিংহভাগ। এটা কীভাবে হতে পারে? ২০২৭ সালের বিধানসভা ভোট শিয়রে। তাই বিজেপি আতঙ্কিত হয়ে আগে থেকেই দরিদ্র, মুসলিম এবং অনগ্রসরদের নাম বেছে বেছে বাদ দিতে চাপ দিয়েছে কমিশনকে। ঠিক সেটাই হয়েছে। অন্যদিকে, আম আদমি পার্টি বলেছে, যে ৩ কোটি নাম বাদ যাচ্ছে, সেই ভুয়ো ভোটে এত বছর ধরে বিজেপি জিতে চলেছে তাহলে।  

    উত্তপ্রেদেশের এসআইআর প্রক্রিয়ার পাশাপাশিই চালু হয়েছে ডিটেনশন ক্যাম্প নির্মাণ। নভেম্বর থেকে এই প্রক্রিয়া একঝাঁক জেলায় শুরু হয়েছে। তিন কোটি নাম বাদ যাচ্ছে। ১ কোটি ১১ লক্ষ ভোটারের নাম থাকলেও তারা সন্দেহজনক। তাদের নাম ২০০৩ সালের তালিকায় নেই। তাদের ডেকে শুনানিতে তথ্য প্রমাণ চাওয়া হবে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কত মানুষকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে?  যদিও সরকার বলেছে, ডিটেনশন সেন্টারের সঙ্গে এসআইআরের সম্পর্ক নেই। অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে অভিযান সারা বছর ধরেই চলে। তাই স্বাভাবিক অভিযানে অনুপ্রবেশকারীদের যখন ধরা হবে তাদের রাখা হবে ডিটেনশন সেন্টারে এবং পুশব্যাক করা হবে নিজেদের দেশে। যদিও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, শুনানির পরও যাদের নাম চুড়ান্ত তালিকায় থাকবে না এসআইআরে, তাদের নিয়ে কী করা হবে? তাদের স্থানও কি ডিটেনশন সেন্টার! 
  • Link to this news (বর্তমান)