নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: উন্নয়নের পাঁচালির ট্যাবলোতে হামলা চালানোয় বিজেপির মণ্ডল সভাপতির খুড়তুতো ভাই গ্রেফতার হতেই নন্দীগ্রামে উত্তেজনা ছড়াল। ধৃতের নাম গৌরাঙ্গ ঘড়া। তাঁর দাদা ধনঞ্জয় ঘড়া বিজেপির নন্দীগ্রাম-৩ মণ্ডল সভাপতি। গৌরাঙ্গ ভেকুটিয়া পঞ্চায়েতের অধীন জেলেমারা বুথের প্রমুখ। শুক্রবার রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে ওই বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। আজ, রবিবার ধৃতকে হলদিয়া আদালতে তোলা হবে। ধৃতের স্ত্রীর অভিযোগ, পুলিশ গ্রেফতারের সময় তাঁকে হেনস্তা করেছে। এমনকি, তাঁদের শিশুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার নন্দীগ্রামের বিধায়ক এনিয়ে থানায় গিয়ে পুলিশকে হঁশিয়ারি দেন। সেসময় থানায় আইসি ছিলেন না। নোটিশ ছাড়াই কেন গ্রেফতার, বিজেপির পক্ষ থেকে সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে বলেন, গ্রেফতার করতে যাওয়ার সময় মহিলা পুলিশ ছিল। গ্রেফতারের সময় দরজা ভাঙার কোনও ঘটনা ঘটেনি। আইন মেনে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলেমারা গ্রামে টোটোয় ফ্লেক্স বেঁধে উন্নয়নের পাঁচালির প্রচার চলছিল। স্থানীয় টোটোচালক নির্মল মাইতির সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান বিজেপি নেতাকর্মীরা। তারপরই ফ্লেক্স ছিঁড়ে নষ্ট করা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল কর্মীরা ওই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। তখন বেহুলা জানা, প্রকাশ জানা এবং পশুপতি পাটলাকে বিজেপি নিগ্রহ করে বলে অভিযোগ। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির সদস্য বাপ্পাদিত্য গর্গ নন্দীগ্রাম থানায় মোট ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। সেই এফআইআরে গৌরাঙ্গর নাম রয়েছে। ধৃত বিজেপি নেতার শ্বশুরবাড়ি নন্দীগ্রাম থানার মহম্মদপুরে। রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে ওই বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের স্ত্রী অনুজিতা ঘড়া বলেন, রাতে সাদা পোশাকে পুলিশ আমার বাপেরবাড়িতে গিয়েছিল। সেসময় কোনও মহিলা পুলিশকর্মী ছিল না। পুলিশ অফিসার ও কর্মীরা আমার চুলের মুঠি ধরে ঠেলে নীচে ফেলে দিয়েছে। আমাদের বাচ্চাকেও ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে। তৃণমূলের ভেকুটিয়া অঞ্চল সভাপতি রাখহরি ঘড়া বলেন, রাজ্যের সর্বত্র উন্নয়নের পাঁচালি ট্যাবলোয় সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরা হচ্ছে। আমাদের পঞ্চায়েত এলাকায়ও এই ট্যাবলো ঘুরছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলেমারা বুথে বিজেপির লোকজন সেই ট্যাবলোর উপর হামলা চালায়। ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেয়। টোটোচালক সহ তৃণমূল কর্মীরা আক্রান্ত হন। ব্লক নেতৃত্ব মোট ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। সেই ঘটনায় একজন গ্রেফতার হয়েছে বলে জেনেছি।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, ফ্লেক্স ছেঁড়ার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। মিথ্যা অভিযোগে আমাদের জেলেমারা বুথের এক নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁর স্ত্রীকে হেনস্তা করা হয়েছে। আমরা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করব। নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ জানিয়েছে, একজন গ্রেফতার হয়েছে। হেনস্তার অভিযোগ ঠিক নয়।