মেটেনি আন্ডারপাসের দাবি, বাকসাড়া রেল ক্রসিংয়ে নিত্য ভোগান্তি যাত্রীদের
বর্তমান | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: ব্যস্ত রাস্তার উপর লেভেল ক্রসিং— কিছুক্ষণের জন্য গেট পড়লেই তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট। নিত্যদিন এই ভোগান্তির কারণে তিতিবিরক্ত দক্ষিণ হাওড়ার বাকসাড়ার বাসিন্দারা। অভিযোগ, এই একটি মাত্র রেল ক্রসিংয়ের উপর নির্ভর করে হাওড়া পুরসভার চারটি বড়ো ওয়ার্ডের লক্ষাধিক মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াত। ফলে গেট পড়লে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয় যানবাহন থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্সকে।
মূলত হাওড়ার চারটি ওয়ার্ড ৪০, ৪১, ৪৫ ও ৪৬ নম্বরের বাসিন্দারা বাকসাড়া লেভেল ক্রসিং ব্যবহার করেন। সাঁতরাগাছি-বাকসাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে কিংবা হাওড়া শহরের বিভিন্ন অংশে যেতে হলে এই রেলগেট পার হওয়া ছাড়া বিকল্প পথ নেই। সকাল থেকেই এই রাস্তায় ছোটো ও মাঝারি গাড়ির লম্বা সারি চোখে পড়ে। তার সঙ্গে যুক্ত হয় অসংখ্য টোটো, অটো, বাইক ও সাইকেল। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় ট্রেন চলাচলের সময়। অভিযোগ, কয়েক মিনিট অন্তর রেলগেট নামানো হয়। সাঁতরাগাছি বা শালিমারগামী এক্সপ্রেস ট্রেন, মালগাড়ি এবং ইঞ্জিনের ঘনঘটা এতটাই বেশি যে, প্রায় তিন মিনিট অন্তর গেট বন্ধ করতে হয়। অনেক সময় ধীরগতিতে ট্রেন চলাচলের কারণেও গেট খোলার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা হয়। এছাড়া লেভেল ক্রসিংয়ের ঠিক পাশেই ট্রেনের কোচ রক্ষণাবেক্ষণের ইয়ার্ড থাকায় সমস্যা আরও বেড়েছে। দিনভর বিভিন্ন ট্রেনের কামরা শালিমার বা সাঁতরগাছি স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। তার জন্য অনেক আগে থেকেই রেলগেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলস্বরূপ, দু’পাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যানবাহনকে। তখন বাইক, অটো, টোটো ও গাড়ির ভিড়ে কার্যত অচল হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। গাড়ির লাইন চলে যায় কোনা এক্সপ্রেসওয়ে পর্যন্ত।
সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন রোগী ও তাঁদের পরিজন। দীর্ঘ যানজটের মধ্যেই অপেক্ষা করতে হয় অ্যাম্বুলেন্সকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহু বছর ধরেই রেল ওভারব্রিজ বা আন্ডারপাস তৈরির দাবি জানানো হচ্ছে। জনপ্রতিনিধি থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন জমা পড়লেও বাস্তবে কোনও অগ্রগতি নেই। এ বিষয়ে হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, লক্ষাধিক মানুষের দাবির কথা তিনি একাধিকবার দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছেন। তবে আশ্বাস ছাড়া বাস্তব ফল মেলেনি বলেই তাঁর অভিযোগ। কবে এই দুর্ভোগের অবসান হবে, সে বিষয়ে আজও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটছে বাকসাড়ার বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র