রাজ্যের ‘সন্দেহজনক’ ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের তালিকা প্রকাশ করুক কমিশন, চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
বর্তমান | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জবাব তোমায় দিতেই হবে। তালিকা তোমায় দেখাতেই হবে — মূলত এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই নির্বাচন কমিশনকে চেপে ধরতে চলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশনকে তাঁর সরাসরি প্রশ্ন, ‘সন্দেহজনক’ যে ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের উল্লেখ কমিশন করেছে, তার তালিকা কোথায়?’ ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের তালিকা লুকোবেন না—আগামী ৩১ ডিসেম্বর দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, এই দাবি তুলে ধরতে চলেছেন তৃণমূলের সেনাপতি।
‘সন্দেহজনক’ কিংবা ‘যৌক্তিক অসঙ্গতি’ ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের ক্ষেত্রে খুঁজে পেয়েছে নির্বাচন কমিশন। যাঁদের এসআইআর প্রক্রিয়ায় শুনানির জন্য হাকডাক শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটার কারা? কোন এলাকার তাঁরা? কি তাঁদের নাম? — এই তথ্য কমিশন কেন প্রকাশ করবে না, সেই প্রশ্নটাই সামনে এনেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। শনিবার থেকে নির্বাচন কমিশনের তরফে শুনানি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেদিনই তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে কমিশনের উদ্দেশ্যে একাধিক প্রশ্ন ছুড়ে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, লজিক্যাল ডিসক্রিপেনশিস বা অসঙ্গতির কথা কমিশন বলছে। সেই মোতাবেক কমিশনের লুকোনোর কী আছে? ওই অসঙ্গতির আওতাভুক্ত ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের তালিকা প্রকাশ করুক। জনসমক্ষে তা আনলে সব রাজনৈতিক দল তা দেখতে পাবে। স্বচ্ছতা থাকবে। কিন্তু কমিশন যখন সেই তালিকা লুকোনোর দিকে যাচ্ছে, তখনই তো অন্য কিছু সন্দেহ হচ্ছে।
তালিকা প্রকাশের দাবি নিয়ে আগামী ৩১ ডিসেম্বর অভিষেকে নিজে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। সঙ্গে থাকবে তৃণমূলের কয়েকজন জনপ্রতিনিধি। নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে যে বৈঠক হবে, তা লাইভ টেলিকাস্ট বা সরাসরি সম্প্রচারের দাবি তুলেছেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, আমরা বাংলার মানুষের প্রতিনিধি হয়ে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে যাব। লুকোনোর কিছু নেই। যে প্রশ্নগুলো করব এবং যে তথ্য চাইব, কমিশনের সৎ সাহস থাকলে তার উত্তর দেবে এবং সরাসরি সম্প্রচার করবে। ‘অসঙ্গতি’ আওতাভুক্ত ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের নামের তালিকা কমিশন যদি প্রকাশ করতে না পারে, তাহলে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন অভিষেক। সেই সঙ্গে এটাও উল্লেখ করেছেন নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। ওদের কাছ থেকে উত্তর না পেলে নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাও কর্মসূচিও করব। আগামী দিন দিল্লিতে আন্দোলন হবে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে অভিষেক সামনে নিয়ে এসেছেন সীমা খান্না নামে একজনের নাম। কমিশনের অ্যাপে গোলযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে সীমা খান্নার কথোপকথনের স্ক্রিনশট তাঁর কাছে রয়েছে বলেও দাবি করেছেন। যা তিনি পরবর্তী সময়ের সুপ্রিম কোর্টে জমা দেবেন বলেও উল্লেখ করেছেন। অভিষেকের বক্তব্য, নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে এসআইআর করেও, বিজেপি বাংলা দখল করতে পারবে না। এফআইআর করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাংলার মানুষ বিজেপিকে জবাব দেবে। - নিজস্ব চিত্র