• প্ল্যান অনুমোদন পেলেই মিলবে নির্মাণের অনুমতি, কড়া অবস্থান কলকাতা পুরসভার, বিপাকে নির্মাতারা
    এই সময় | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সতর্ক থাকতে তাই বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদিত হওয়ার আগে নির্মাণের অনুমতি মিলছে না। এতে আটকে গিয়েছে শহরের অনেক প্রোমোটারের কাজ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনও ফাঁক রাখতে চান না পুর–কর্তৃপক্ষ। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘পুরসভার বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনের নিয়ম অনেক সহজ করা হয়েছে। সেই নিয়ম মানতেই হবে।’

    ২০২৪–এ মার্চে গার্ডেনরিচের একটি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে কমপক্ষে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তারপরে কলকাতায় এ ধরনের নির্মাণ নিয়ে কঠোর অবস্থান নেয় পুরসভা। অভিযোগ উঠেছিল, গার্ডেনরিচের ওই ভেঙে পড়া নির্মাণের কোনও প্ল্যান অনুমোদন করা হয়নি। তা সত্ত্বেও নিম্নমানের ইমারতি দ্রব্য ব্যবহার করে ওই নির্মাণ হয় বলে অভিযোগ।

    এর পরেই শহর জুড়ে বেআইনি নির্মাণ বন্ধে নড়েচড়ে বসে পুরসভা। ঠিক হয়, এলাকায় ঘুরে ঘুরে বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করবেন পুর–ইঞ্জিনিয়াররা। বেআইনি কিছু চোখে পড়লে সেই অংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেবেন তাঁরা। কিন্তু সেই নির্দেশ বাস্তবায়িত করতে গিয়েই পুর–ইঞ্জিনিয়াররা একাধিক বার স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ। তার পরেও মেয়রের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল — বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিতকরণের কাজে কোনও ইঞ্জিনিয়ারের গাফিলতি প্রমাণিত হলে তাঁকে শো–কজ় করা হবে। বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’বছরে সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের অন্তত ১২ জন ইঞ্জিনিয়ারকে শো–কজ় করা হয়েছে। বিভাগের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘বেআইনি নির্মাণের সমস্যা চিহ্নিত করে গত দু’বছরে যে ভাবে তার মোকাবিলা হয়েছে, কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে তেমন নজির কম।’

    বেআইনি নির্মাণ রুখতে এখন দেড় কাঠা জমিতেও তিন তলা বাড়ি তৈরির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সে জন্য বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন থাকতেই হবে। এ কাজে এখন বেশি সময়ও লাগে না। যদিও প্ল্যান অনুমোদনের প্রক্রিয়া নিয়ে নির্মাতাদের অভিযোগ, প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত বিলম্বিত লয়ে এগোয়। ফলে দীর্ঘ দিন নির্মাণ কাজ আটকে থাকছে।

    পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে খবর, কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ড জুড়ে এক হাজারেরও বেশি নির্মাণের বেআইনি অংশ ভাঙা হয়েছে। ‘টক টু মেয়র’–এ অভিযোগ মিললে তার নিষ্পত্তিও হয়েছে দ্রুত। তবে আইনি জটিলতার কারণে কিছু সমস্যার সমাধান হয় না বলে পুর–আধিকারিকদের দাবি।

  • Link to this news (এই সময়)