• জায়গা বিক্রির নামে প্রাক্তন KLO জঙ্গির সঙ্গে দেড় কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ
    এই সময় | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • কৌশিক দে, মালদা

    মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র ছেড়ে মূলস্রোতে ফিরেছিলেন প্রাক্তন কেএলও সদস্য সতীশ রাজবংশী। এ বার তিনিও প্রতারণার শিকার হলেন। জায়গা বিক্রির নামে গাজোলের দুই জমির মালিক সতীশের সঙ্গে প্রায় দেড় কোটি টাকার প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে পুরো বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনকে অভিযোগ জানিয়েছেন সতীশ। ওই দুই ব্যবসায়ী শাসকদলের কয়েকজনের নাম ভাঙিয়ে এবং পুলিশের ভয় দেখিয়ে টাকা নিয়েও আড়াই বিঘা জমি রেজিস্ট্রি করে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ।

    এই ঘটনায় প্রশাসনকে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাচ্ছেন প্রাক্তন কেএলও সদস্য। তিনি বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর কথামতো আমি এবং আমার মতো অনেকেই নিষিদ্ধ সংগঠন কেএলও ছেড়ে সমাজের মূলস্রোতে ফিরেছিলাম। আমাদের পরিকল্পনা ছিল গাজোলে রাস্তার ধারে একটি জায়গা কিনে সেখানে নতুন করে ব্যবসা চালু করার। পাশাপাশি অবশিষ্ট জমি বিক্রি করে নিজেদের স্বনির্ভর করব। আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন সদস্য টাকা একত্রিত করে জমিতে নিয়োগ করেছিলাম। কিন্তু এ ভাবে যে প্রতারণার ফাঁদে পড়তে হবে, তা ভাবতে পারিনি। প্রায় চার বছর ধরে এটা চলছে। যদি কোনও ব্যবস্থা না-নেওয়া হয়, তা হলে হয়তো আমাদের পুরোনো পথেই ফিরে যেতে হবে।'

    প্রশাসনকে সতীশ জানিয়েছেন, ২০২১-এ গাজোল কলেজ সংলগ্ন ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে আড়াই বিঘা জমির জন্য প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন গাজোলের বাসিন্দা দুই জমির মালিককে। সতীশের বাড়ি গাজোল থানার পান্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আদিনা স্টেশন সংলগ্ন গোয়ালপাড়া এলাকায়। পরিবারে বাবা-মা, স্ত্রী, সন্তান রয়েছেন। প্রাক্তন কেএলও সদস্য সতীশের পরিকল্পনা ছিল ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে এবং অন্য কয়েকজন সদস্যের কাছ থেকে জমানো টাকা নিয়ে জায়গা কিনে একটি প্ল্যান্ট করবেন। চার বছর আগে টাকা দিলেও তা ফিরিয়ে দেওয়া তো দূরের কথা, রেজিস্ট্রি না-করে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দিচ্ছেন জমির মালিকরা। সতীশের অভিযোগ, 'নিজের কিছু সম্পত্তি ও অন্য সহকর্মীদের কাছ থেকে টাকা জোগাড় করে আড়াই বিঘা জায়গা কিনেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর কথামতো অস্ত্র ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছি। কিন্তু জমির মালিক অমিত প্রসাদ ও সমিত প্রসাদ দু'জনেই এখনও পর্যন্ত অসহযোগিতা করছেন। জমিতে পিলার ও কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা হয়েছিল, সেগুলিও ভেঙে ফেলে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। কোনও উদ্যোগ না-নেওয়া হলে হয়তো আবার আগের পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে হবে।'জমির মালিক অমিতের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। অনেকদিন আগে ওই জমির রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। এখন কেন এই ধরনের অভিযোগ করছেন, জানি না।'

    এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। উত্তর মালদার বিজেপির সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক অভিষেক সিংহানিয়া জানিয়েছেন, তৃণমূলের কাজই হচ্ছে অসহায় মানুষের জমি দখল করা এবং পিছন থেকে মদত জুগিয়ে এরকম ভাবে হয়রানি করা। তৃণমূল পরিচালিত গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন বলেন, 'আসলে কী ঘটেছে তা জানি না। তবে দল এখানে কোনও ভাবেই থাকবে না। তার জন্য প্রশাসন রয়েছে। অভিযোগ হলে পুলিশ তদন্ত করে দেখবে।' গাজোল থানার পুলিশ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগ হলে অবশ্যই বিষয়টি

  • Link to this news (এই সময়)