• শীত পড়তেই ভিড় বাড়ছে টাকি পর্যটন কেন্দ্রে
    আজকাল | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বছরের শেষে উৎসবের মেজাজে বাঙালি। তার মধ্যে রাজ্যজুড়ে জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। ছুটির মেজাজের মধ্যেই চলছে বনভোজন। বিশেষ করে নৌকোবিহারে ইছামতী ভ্রমণ, ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত দেখা বড়দিনের পর থেকেই জমজমাট হয়ে ওঠে টাকি।

    বছরের শেষ কিংবা নতুন বছরের শুরুতে কোথাও ঘুরতে যাবার কথা মাথায় এলে অনেকেই ভাবেন টাকির কথা। বহু পুরনো ও ঐতিহ্যময়ী পর্যটন কেন্দ্র টাকি । উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহাকুমার টাকি পৌরসভার অন্তর্গত টাকি ইছামতি তীর সংলগ্ন সীমান্তবর্তী টাকি পর্যটন কেন্দ্র বর্তমানে রাজ্যেরএকটি ঐতিহ্যপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে।

    একটু শীত পড়তেই বেড়াতে আসা, কয়েক দিনের ছুটিতে সময় কাটানো, পিকনিক করার মত বিশেষ এক পর্যটন কেন্দ্রের নাম টাকি । দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষ শীতের শুরুতেই পরিবার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে ঘুরতে আসেন টাকি ইছামতির তীরে।

    ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী টাকি পৌরসভার ইছামতীর তীর বরাবর গড়ে উঠেছে টাকি পর্যটন কেন্দ্র। এখানে আসলেই প্রথম যেটা দেখা যায় ইছামতি নদী ভারত বাংলাদেশের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে । এই ইছামতি নদীর ওপারে দেখা যায় বাংলাদেশ।

    ইছামতীর বুকে ভ্রমণ করার জন্য আছে ১০ টি ভুটভুটি। প্রতি ৪০ মিনিট ভ্রমণ করার জন্য ভাড়া দিতে হয় ১০০০ টাকা । আছে নদীর তীর বরাবর পার্ক , আছে সুন্দর সুন্দর বসার বিভিন্ন ডিজাইনের সুবন্দোবস্ত , আছে প্রায় ৬০ ফুট উঁচু একটি টাওয়ার ।

    টাওয়ারের মাথায় উঠলে দেখা যায় ডক্টর বিধান চন্দ্র রায়ের বাংলাদেশের বাড়ি । আছে ইকোপার্ক, আছে মিনি সুন্দরবন । যেখানে লোনা জলের সুন্দরী, গরান ,গর্জন ,গেঁও ও হেতালি গাছে ঢাকা সবুজ সুন্দরবন , ৫০০ বছরের পুরানো জমিদার বাড়ি। থাকার জন্য প্রায় ৪০ টি বেসরকারি লজ রয়েছে টাকি পর্যটন কেন্দ্রের আশেপাশে।

    আছে টাকি পৌরসভা পরিচালিত সরকারি লজ নিপেন্দ্র অতিথিশালা যার প্রত্যেক দিনের ভাড়া নন এসি ৬০০ টাকা, এসি ১২০০ টাকা । খাওয়া-দাওয়ার জন্য আলাদা খরচ দিতে হয়। বেসরকারি লজের ভাড়া এক একটি লজে আলাদা আলাদা। সরকারি ও বেসরকারি লজগুলিতে অনলাইনে বুকিং সিস্টেম নেই। তবে ফোনের মাধ্যমে বুকিং করা হয়।

    এক সপ্তাহ আগে থেকেই বুকিং করলে ভালো হয় অথবা রুম থাকলে টাকি পৌঁছেও বুকিং করা যেতে পারে। টাকি পর্যটন কেন্দ্রে আসতে হলে শিয়ালদা থেকে শিয়ালদা হাসনাবাদ লোকাল ট্রেন ধরে টাকি স্টেশনে নামতে হবে । টাকি স্টেশনে নেমে অটো, টোটো কিংবা ভ্যানে বসলেই কুড়ি টাকার বিনিময়ে পৌঁছে যাওয়া যায় টাকি রাজবাড়ীর ঘাট অর্থাৎ টাকি পর্যটন কেন্দ্রে।

    সড়কপথে এলে ধর্মতলা থেকে ২৫৩ রুটের বাস ধরে বারাসাত হয়ে বসিরহাট বটঘাট নামতে হবে। ওখান থেকে যেকোনও অটো কিংবা টোটো ধরে টাকি রোড ময়লা খোলায় আসতে হবে । ময়লাখোলা থেকে অটো ধরে টাকি থুবার মরে নামতে হবে।

    টাকি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক গাজী জানান, এর নাম মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে গেছে।পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন রকমের সুযোগ সুবিধা আছে। খোলা আকাশের নিচে নদীর চরে পিকনিক করার ব্যবস্থা আছে। আবার পরিবার নিয়ে ঘুরতে এলে লজে থাকার ব্যবস্থা আছে সরকারি কিংবা বেসরকারি লজগুলোতে।দুই বাংলার এই ছোঁয়া অনুভব করতেই দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকরা এসে ভিড় জমাচ্ছেন শীতের শুরু থেকেই।

    তবে ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি টাকি পর্যটন কেন্দ্র চাঁদের হাট হয়ে ওঠে পর্যটকদের ভিড়ে । সমস্ত রকম সমস্যা এড়াতে বিশেষ বিশেষ দিনগুলিতে থাকে পুলিশি নিরাপত্তা ও পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং ব্যবস্থা।

    টাকি ইছামতীর নদীর চরে পিকনিক করতে আসা উজ্জল পাত্র বলেন, 'বহুদিন ধরেই টাকি পর্যটন কেন্দ্রের নাম শুনেছি কিন্তু এই প্রথমবার টাকিতে বন্ধুবান্ধব নিয়ে পিকনিক করতে এলাম খুব ভাল লাগলো । ২-৩ দিন ছুটি কাটানোর পক্ষে টাকি পর্যটন কেন্দ্র খুবই সুন্দর।'
  • Link to this news (আজকাল)