৩০ ঘণ্টায় ২৪ বার ভূমিকম্পে সক্রিয় ৩টি ফল্ট লাইন! দেশে বিরাট বিপর্যয়ের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
প্রতিদিন | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত শুক্রবার ৪.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে গুজরাটের কচ্ছ। কম্পনে কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হলেও, এই ঘটনা ফের উসকে দিয়েছে ২৪ বছরের পুরনো ক্ষত। যে বিপর্যয়ে তছনছ হয়ে গিয়েছিল হাজার হাজার মানুষের জীবন। তথ্য বলছে শুক্রবার ভূমিকম্পের প্রথম ধাক্কার পর গত ৩০ ঘণ্টায় ২৪ বার কেঁপে ওঠে গুজরাটের মাটি। এই কম্পনের জেরে গুজরাটে সক্রিয় হয়ে উঠেছে তিনটি ফল্ট লাইন্স। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে ভূ-বিজ্ঞানীদের।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম ভূমিকম্পের ৩০ ঘন্টার মধ্যে ২৪টি আফটারশক অনুভূত হয়ে গুজরাটে। শুক্রবার ভোর ৪.৩০ থেকে শনিবার সকাল ৯.৪৫ এর মধ্যে এই কম্পনগুলি নর্থ ওয়াগদ ফল্ট থেকে উদ্ভূত হয়, যা এই অঞ্চলের সবচেয়ে সক্রিয় ফল্ট। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের যে রিপোর্ট সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, এই কম্পনের জেরে একসঙ্গে সক্রিয় হয়ে উঠেছে কাথরোল হিল, গোরা ডোঙ্গার এবং নর্থ ওয়াগদ ফল্ট। গুজরাটের কচ্ছ অঞ্চল এমনিতেই ভূমিকম্পপ্রবণ। তার উপর তিনটি ফল্ট একসঙ্গে সক্রিয় হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবি, দ্রুত সতর্কতামূলক পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ কিছু ঘটতে পারে এখানে।
ভুজে কচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গৌরব চৌহান বলেন, “নগর পার্কার এবং আল্লা বুন্দের মতো সক্রিয় ফল্ট লাইনগুলি বছরের পর বছর ধরে এখানে ভূমিকম্পের অন্যতম কারণ। কিন্তু এখন উদ্বেগের বিষয় হল, সাম্প্রতিক কম্পনগুলি নর্থ ওয়াগদ ফল্টের সক্রিয়তা নিশ্চিত করেছে। গত কয়েক মাস ধরে কাথরোল হিল, গোরা ডোঙ্গার ফল্ট লাইনের ভূমিকম্পগুলি ইঙ্গিত দিচ্ছে এই তিনটি ফল্ট লাইন একত্রে সক্রিয় হয়েছে।” চৌহানের মতে, বড় ভূমিকম্পের পর ১ থেকে ৩ মাত্রার আফটারশক বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা কমায়। কিন্তু একাধিক ফল্ট লাইন একসঙ্গে সক্রিয় হওয়া ভবিষ্যতে বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বাড়ায়।
উল্লেখ্য, কচ্ছ ইতিমধ্যেই ১০টিরও বেশি ফল্ট লাইনে অবস্থিত, যার মধ্যে রয়েছে কচ্ছ মেইনল্যান্ড ফল্ট এবং সাউথ ওয়াগদ ফল্ট। যা ২০০১ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের (রিখটার স্কেলে ৭.৭) সময় ভেঙে গিয়েছিল। এখনও পর্যন্ত, বেশিরভাগ ভূমিকম্পই নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যেই কেন্দ্রীভূত ছিল। তবে, ২০২৫ সালে রেকর্ড করা সাম্প্রতিক কম্পনগুলি ইঙ্গিত দেয় যে চাপ নতুন ফল্ট সিস্টেমে স্থানান্তরিত হচ্ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে ভবিষ্যতে শক্তিশালী ভূমিকম্প কেবল নির্দিষ্ট অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। তা পশ্চিম ভারতের বিরাট অংশকে প্রভাবিত করতে পারে।