দেড় বছর পেটে হাফ মিটার কাপড়! উত্তরপ্রদেশে চিকিৎসকের ভুলে জীবন দুর্বিষহ মহিলার
প্রতিদিন | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেড় বছর আগে সন্তান প্রসব করেছিলেন মহিলা। কিন্তু তার পর থেকেই পেটে অসহ্য যন্ত্রণা। ডাক্তারকেও দেখিয়েছিলেন। কিন্তু যন্ত্রণা কমেনি। উল্টে যত দিন গিয়েছে, যন্ত্রণা তত বেড়েছে। শেষমেশ অস্ত্রোপচার করে দেখা গেল, মহিলার পেটে কাপড়ের টুকরো আটকে রয়েছে, যার দৈর্ঘ্য প্রায় হাফ মিটার। স্বচক্ষে সেই কাপড়ের টুকরো দেখে স্তম্ভিত মহিলা। অস্ত্রোপচার মাধ্যমে সন্তান প্রসবের (সিজারিয়ান ডেলিভারি) সময় এই কাপড়ের টুকরোই তো তিনি দেখেছিলেন চিকিৎসকের হাতে!
এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন উত্তরপ্রদেশের নয়ডার সেই মহিলা এবং তাঁর পরিবার। অভিযোগ দায়ের হয়েছে গ্রেটার নয়ডার সেই বেসরকারি হাসপাতালের তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। পেটে যন্ত্রণা শুরু হওয়ার পরেই ওই হাসপাতালে গিয়েছিলেন মহিলা। সেই সময় বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই কমিটিতে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের দুই কর্তা ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগও দায়ের করেছে মহিলার পরিবার।
পরিবারের অভিযোগ, ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেছিলেন মহিলা। দু’দিন পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকেই অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয় পেটে। ধীরে ধীরে সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। সন্তান প্রসবের সময়ে পেটের যে অংশে অস্ত্রোপচার হয়েছিল, সেই অংশটা ফুলে যায়। তা নজরে আসতেই একাধিক হাসপাতালে গিয়েছিলেন মহিলা। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হয়েছিল। কিন্তু যন্ত্রণার কারণ স্পষ্ট হয়নি। এর পর চলতি বছরের মার্চে ভেঙে পড়ে মহিলার শরীর। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সেই ভাবে কোনও পরীক্ষা না করে শুধু ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল মহিলাকে। তার পরেও যন্ত্রণা না কমায় এপ্রিল মাসে কৈলাশ হাসপাতালে যান মহিলা। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। সেই সময়েই দেখা যায়, পেটে কাপড়ের টুকরো পড়ে রয়েছে। প্রমাণ হিসাবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেই কাপড়ের টুকরো পেট থেকে বার করে আনার ভিডিও পুলিশের কাছে জমা করেছে মহিলার পরিবার।
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মহিলার স্বামী। কিন্তু সেখানেও তদন্তে দেরি করা হয় বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, কাপড়ের টুকরোটিকে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানোই হয়নি। তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বার বার। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালতে যায়। আদালতের নির্দেশে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা রুজু করেছে।