• কাঁথা, পটচিত্র, বহুরূপী... সৌজন্যে প্রেস ক্লাবের গ্রাম কৃষ্টি উৎসব
    এই সময় | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: ছোট্ট একফালি জমির মধ্যে কয়েকটা মাত্র স্টল। কোনওটায় রয়েছে বীরভূমের কাঁথা স্টিচ-এর নানা কিছু, কোনওটা পটচিত্রের। আবার রয়েছে ডোকরার গয়নাও। জৈব প্রক্রিয়ায় বানানো তেল, মশলা, ঘি, গুড়-সহ বাঙালির হেঁসেলের টুকিটাপি। ময়দানে কলকাতা প্রেস ক্লাবে গত ২৩ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে ‘গ্রাম কৃষ্টি উৎসব।’ তবে বিষয়টা শুধু এই বিকিকিনির নয়। আসল উদ্দেশ্য, গ্রাম-বাংলার মানুষকে স্বনির্ভরতার পাঠ দেওয়া। সঙ্গে বিভিন্ন জেলার সম্পৃক্ত সংস্কৃতির কিছু টুকরো উপস্থাপনা। সেখানে পুতুল নাচ থেকে ভাটিয়ালি, ঝুমুর থেকে রাভা ও অসুরের শৈল্পিক উপস্থাপনা, খন পালা থেকে গম্ভীরা, বাউল গান, কবি গানের পালা, চণ্ডীনৃত্য থেকে নাটুয়া নৃত্য, ধামসা-মাদলে আদিবাসী তাল থেকে ভাওয়াইয়া — সব কিছুই স্বল্প পরিসরে উঠে এসেছে নিখুঁত ভাবে।

    তবে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মেয়েদের নিয়ে নানা কর্মশালা এই সাত দিনের মেলার অন্যতম। বহুরূপী-র কর্মশালার সঞ্চালনা করেন বীরভূমের প্রসিদ্ধ শিল্পী সুবল দাস বৈরাগ্য। বড়দিনে বিশেষ ভাবে সক্ষম কচিকাঁচাদের জন্য কাগজের মুখোশ তৈরির কর্মশালার প্রশিক্ষক ছিলেন প্রখ্যাত ছৌ মুখোশ শিল্পী গৌতম মালাকার। তীর্থ জ্যোতি ভাদুড়ির পরিচালনায় ‘ভেষজ সাবান’ তৈরির কারিগরি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেন প্রায় ৩০ জন! সব ক্ষেত্রেই অংশগ্রহণকারীদের কী ভাবে এগুলো রোজগার-সহায়ক হয়ে উঠতে পারে বা নিজেদের জীবিকামুখী করে তুলতে পারেন, জানানো হয়েছে তার খুঁটিনাটিও।

    এর বাইরে ‘আমাদের কথা, আমরা বলব’ পর্বে আলোচনা হয়েছে লিঙ্গ সাম্য, গার্হস্থ্য হিংসা, বাল্য বিবাহের বিপদ, প্রান্তিক যৌনতা থেকে পথবাসী, বস্তিবাসী ও গৃহবাসী প্রবীণ নাগরিকদের উপরে ঘটে চলা নির্যাতন ও তার আইনি সুরাহার দিক নিয়ে।

    আজ সোমবার এই উৎসবের শেষ দিন। হাতে সময় থাকলে দুপুর ২টো থেকে রাত ৮টার মধ্যে একফাঁকে উঁকি দিয়ে দেখা যেতেই পারে কেমন করে জীবন সংগ্রামে টিকে থেকে সেখানেই আলোর দিশা দেখাচ্ছেন সমাজের ‘তুচ্ছ’ মানুষগুলো।

  • Link to this news (এই সময়)