চন্দননগরে বায়োডাইভার্সিটি পার্কের অনুমোদন, বরাদ্দ প্রায় ১০ লক্ষ টাকা
বর্তমান | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: হুগলি জেলার ঐতিহ্যবাহী চন্দননগর শহরের মুকুটে এবার জুড়ছে নতুন পালক। চন্দননগরের খলিসানি মৌজায় বায়োডাইভার্সিটি পার্ক তৈরির অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই রাজ্য বায়োডাইভার্সিটি বোর্ডের মাধ্যমে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দও করা হয়েছে। রাজ্যের ওই প্রকল্পকে ঘিরে পরিবেশ সচেতন নাগরিক এবং বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠন খুব উৎসাহী। চন্দননগর পুরসভা ওই প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করবে। রাজ্য সরকারের এই অনুমোদন ও বরাদ্দ পেয়ে পুরকর্তারাও খুশি। তাই প্রকল্প অনুমোদন পেতেই কাজে নেমে পড়েছেন শহরের বায়োডাইভার্সিটি বোর্ডের কর্তা এবং পুরকর্তারা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কেএমডিএ পার্কের মধ্যে ওই নতুন পার্কটি গড়ে তোলা হবে। তাতে শহরের নাগরিকরা জীববৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণের বাড়তি সুযোগ পাবেন।
চন্দননগরের বায়োডাইভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান তথা শিক্ষক সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, একটি ঐতিহ্যবাহী শহরের জন্য রাজ্য সরকারের বায়োডাইভার্সিটি পার্ক তৈরির অনুমোদন মেলা একটি বড় সাফল্য। খুব সম্প্রতি আমরা ওই বিষয়ে প্রকল্প জমা দিয়েছিলাম। তার থেকেও দ্রুত তা অনুমোদন হয়েছে। শহরে আমরা নতুন বৈচিত্র্যময় ‘সবুজ ফুসফুস’ গড়ে তুলব। সেখানে হারিয়ে যাওয়া গাছ থেকে কীটপতঙ্গ থাকবে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা ও পরিবেশের অন্যান্য সজীব বস্তু সম্পর্কে বাড়তি ধারণা তৈরি হবে। দ্রুত ওই পার্ক তৈরির কাজ শেষ করা হবে।
চন্দননগরের মেয়র প্রবীণ রাম চক্রবর্তী বলেন, বায়োডাইভার্সিটি নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করতে আমরা একটি পৃথক পরিষদই তৈরি করে দিয়েছি। সেই কমিটি খুবই ভালো করছে। বস্তুত তারই পুরস্কার হিসেবে আমরা বায়োডাইভার্সিটি পার্ক তৈরির টাকা পেয়েছি। শহরের কেএমডিএ পার্ক নাগরিকদের কাছে একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। খলিসানির ওই পার্কেই আমরা নতুন জীববৈচিত্র্য উদ্যান তৈরি করব। তাতে নাগরিকরা সহজেই নতুন রকমের ওই পার্ককে উপভোগ করতে পারবেন। জেলার পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের একটি যুক্তমঞ্চের কর্তা গৌতম সরকার বলেন, উদ্যোগ খুবই ভালো। কংক্রিটের জঙ্গল হয়ে পড়া চন্দননগরের বুকে বাড়তি সবুজ তৈরি করা যাবে। তবে বিষয়টির একটি শিক্ষা ও সচেতনতামূলক দিক আছে। আশা করব, উদ্যোক্তারা সেই বিষয়টি নজরে রাখবেন। না হলে উদ্দেশ্য সফল হবে না।
গত কয়েকবছর ধরেই চন্দননগরে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে সেখানকার বায়োডাইভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট কমিটি। শহরের প্রাচীন গাছগুলিকে ঘিরে কিউআর কোড বসানোর প্রকল্প চন্দননগরে তো বটেই, জেলার বিভিন্ন অংশেও প্রশংসিত হয়েছিল। এরপর সদ্য জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যে বিভিন্ন পুজো কমিটিকে পুরস্কৃত করার কাজও করেছিল ম্যানেজমেন্ট কমিটি। সেই প্রকল্পও সরকারি অনুমোদন পেয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবার বায়োডাইভার্সিটি পার্ক তৈরির অনুমোদন মিলেছে। শহরের বুকে বাড়তি ‘ফুসফুস’ তৈরির প্রকল্প নিয়ে নাগরিক মহলে চর্চা ইতিমধ্যেই জোরাল হয়েছে।