রুজিতে টান, ভারতীয় পাসপোর্ট দেখলেই ‘কালো’ তালিকাভুক্ত!
বর্তমান | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বনগাঁ: গত মঙ্গলবার দুপুরে পেট্রাপোল সীমান্তে অটো নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন পলাশ মণ্ডল। পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আরও অটোচালক। বাংলাদেশ থেকে একজন যাত্রী আসতেই কয়েকজন এগিয়ে গেলেন। কিন্তু ওই যাত্রী যেতে না চাওয়ায় সকলেই হতাশ হলেন। অটো চালক পলাশ মণ্ডল বললেন, আগে এই স্ট্যান্ড থেকে আমরা দিনে ৪-৫টি ট্রিপ করতাম। এখন একটা ট্রিপ পেতেই দিন চলে যায়। বাংলাদেশের অশান্তিতে আমাদের পেটে টান পড়েছে। বছর খানেক ধরে এমন অবস্থা চলছে। ক্রমে তা আরও খারাপ হচ্ছে। শুধু অটো চালকরা নয়। বাংলাদেশের অস্থিরতায় টান পড়েছে সীমান্তে কাজে যুক্ত বহু মানুষের। বনগাঁ শহরের বহু বাসিন্দা বাংলাদেশে কম্বল সহ বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করতে যেতেন। মাল্টি ভিসায় প্রতিদিন ওদেশে ভারতের পণ্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতিতে তাঁদের রুজিতেও টান পড়েছে। ভারতীয় পাসপোর্ট দেখলেই কালো তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। এক যুবক বললেন, দীর্ঘদিন ধরে ওদেশে পণ্য নিয়ে যাতায়াত করি। এখন গেলে পাসপোর্টে ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ সিল মেরে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
সূত্রের দাবি কারণ হিসেবে ওরা জানাচ্ছে, এদের নাম তালিকায় রয়েছে। তবে কোন তালিকা সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। পেট্রাপোল সীমান্তে মুদ্রা বিনিময় ব্যবসা থেকে পরিবহণ সব ব্যবসাতেই প্রভাব পড়েছে। প্রভাব পড়েছে ছোটো চায়ের দোকানের বিক্রিবাটাতেও।
ওদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তিতিবিরক্ত বাসিন্দারাও। তাঁদের মতে দেড় বছর হতে চলল দেশে অস্থিরতা চলছে। জানি না এর অবসান কবে হবে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছেন ৮৯৪ জন যাত্রী। ওদেশে ৮৪৩ জন যাত্রী গিয়েছেন। সংখ্যাটা বছর খানেক আগের তুলনায় অনেক কম।
মঙ্গলবার যশোর চৌগাছা থেকে সস্ত্রীক ভারতে এসেছিলেন অধ্যাপক কানাইলাল পাল। তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে আইনের শাসন নেই। স্থায়ী সরকার থাকলে আইনের শাসন থাকে। খুলনার বাসিন্দা যুথিকা মণ্ডল পেট্রাপোল সীমান্তে এসে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের দেখলেই মারছে। দু’দিন আগে বাড়ি থেকে একটু দূরে এক নেতাকে গুলি করে মেরেছে দুষ্কৃতীরা। আমরা ভালো নেই।