• আরাবল্লী রায় স্থগিত সুপ্রিম কোর্টের, কেন্দ্রকে কী নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত?
    এই সময় | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আরাবল্লী পর্বতের সংজ্ঞা বদল সংক্রান্ত মামলায় আগের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আপাতত ২০ নভেম্বরের নির্দেশ কার্যকর হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এই মামলার পরবরতী শুনানি হবে ২১ জানুয়ারি। যেখানে যেখানে যা যা জটিলতা রয়েছে, সেই সব মেটানোর জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। ওই বেঞ্চের আরও ২ জন সদস্য হলেন বিচারপতি জেকে মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি এজি মসিহ।

    কেন্দ্র এবং রাজস্থান, গুজরাট, দিল্লি এবং হরিয়ানার সরকারকে (এই চার রাজ্যে আরাবল্লী রয়েছে) নোটিস পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই সুয়ো মোটো মামলায় তাদের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।

    প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, যা রিপোর্ট রয়েছে বা যে রায় দেওয়া হয়েছে, সেটা নিয়ে কাজ শুরু করার আগে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া প্রয়োজন। যার মাধ্যমে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া থাকবে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আগের প্যানেল আরাবল্লী নিয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছে। তা কার্যকরী হলে পরিবেশের উপর কী কী প্রভাব পড়তে পারে, সেটা বিচার করার জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গড়তে হবে। আগের কমিটির অধিকাংশ সদস্যই ছিলেন আমলা।

    আরাবল্লী এলাকা খনিজদ্রব্য সমৃদ্ধ। ওই এলাকায় খননকাজ করা যেতেই পারে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ওই পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বানাতে হবে এবং আদালতের সিলমোহর না মেলা পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করা যাবে না। শুধু তাই নয়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসার আগে স্টেকহোল্ডারদের (যাঁরা ওই এলাকায় কোনও কাজের জন্য সরাসরি প্রভাবিত হতে পারেন) দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতামতও নিতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।

    ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০০ মিটারের বেশি উঁচু না হলে তাহলে সেই পাহাড়কে আর আরাবল্লী পাহাড়শ্রেণির অংশ বলে গণ্য করা যাবে না। কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রকের দেওয়া আরাবল্লী নিয়ে এই সংজ্ঞাতেই এর আগে সিলমোহর দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপরেই তীব্র প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন গোটা দেশের পরিবেশকর্মীরা। এই সংজ্ঞার বাস্তবায়ন হলে ওই এলাকার সামগ্রিক পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে, গোটা উত্তর ভারতের পরিবেশেও বদল আসবে বলে দাবি করা হয়েছিল। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, ওই রিপোর্ট কার্যকর হলে আরাবল্লীর অধিকাংশই আর পাহাড় হিসেবে গণ্য হবে না। বেলাগাম খননকার্য বাড়বে এবং তার জেরে ওই এলাকার সামগ্রিক বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু তাই নয়, বেলাগাম খনন হলে দিল্লি ও লাগোয়া এলাকার দূষণ আরও বেড়ে যাবে বলে দাবি করা হয়েছিল। যদিও সেই দাবি মানতে চায়নি সরকার, খোদ বনমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, কোনওভাবেই বেলাগাম খনন হবে না। নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী আরাবল্লীর কোনও ক্ষতিও হবে না। এই টানাপড়েনের মাঝেই এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতে শুনানি ছিল। সেখানেই আগের রায় স্থগিত করল সুপ্রিম কোর্ট।

  • Link to this news (এই সময়)