আজকাল ওয়েবডেস্ক: থানার কোয়ার্টার থেকে মহিলা হোমগার্ডের দেহ উদ্ধার হয়েছিল গতকাল। ক্যানিং থানার সাব ইন্সপেক্টরের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই মহিলা হোমগার্ডের মর্মান্তিক পরিণতি বলেই পরিবার শুরু থেকেই অভিযোগ তুলেছিল। এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক ক্যানিং থানার সাব ইন্সপেক্টর সায়ন ভট্টাচার্য। তাঁর খোঁজে জোরকদমে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
অন্যদিকে মহিলা হোমগার্ডের রহস্যমৃত্যু কাণ্ডে ইতিমধ্যেই খুনের মামলা রুজু করেছে বারুইপুর জেলা পুলিশ।তদন্তে গতি আনার জন্য সিট গঠন করেছে তারা। ছ'সদস্যের এই বিশেষ তদন্তকারী দলের প্রধান করা হয়েছে বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রূপান্তর সেনগুপ্তকে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, মহিলা হোমগার্ড রেশমির মৃত্যুর খবর পেয়েই পালিয়ে গেছেন সাব ইন্সপেক্টর সায়ন ভট্টাচার্য। রেশমির রহস্যমৃত্যুর পরেই বারুইপুর পুলিশের জেলা অধিকর্তার নির্দেশে সাসপেন্ড করা হয়েছে ক্যানিং থানার সাব ইন্সপেক্টর সায়ন ভট্টাচার্যকে।
গতকাল রবিবার ক্যানিং থানার কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল এক মহিলা হোমগার্ডের দেহ। ক্যানিং থানার সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে তাঁর পরিবার। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
বারুইপুর পুলিশ জেলার ক্যানিং থানার ক্যানিং পুলিশ কোয়ার্টারের মধ্য থেকেই উদ্ধার হয় গুলজান পারভিন মোল্লা (২২) ওরফে রেশমির দেহ। গুলজান পারভিন মোল্লার বাড়ি ক্যানিং ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত জীবনতলা থানার উত্তর মৌখালী এলাকায়।
প্রসঙ্গত, বছর দু’য়েক আগে পঞ্চায়েত ভোটের সময় ভাঙড়ে গিয়ে খুন হন রেশমির বাবা রশিদ মোল্লা। তারপরই হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয়েছিল বাড়ির বড় মেয়েকে। এখন সেই মেয়ের এই পরিণতিতে শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়।
মৃতের পরিবারের তরফে যদিও এই ঘটনার জন্য এক পুলিশ আধিকারিককেই কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। ক্যানিং থানার সাব ইন্সপেক্টর সায়ন ভট্টাচার্যর নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, সায়নের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল রেশমির সঙ্গে। বিষয়টি জানাজানি হওয়াতেই তিনি খুন করেছেন বলে অভিযোগ। তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি করেছেন মৃতার কাকা ছয়েদ মোল্লা।
সূত্রের খবর, শুক্রবার ডিউটির পর ক্যানিং থানার পিছনের দিকে থাকা কোয়ার্টারে গিয়েছিলেন হোমগার্ড রেশমি। কিন্তু তারপর থেকে তাঁর আর কোনও সাড়া পাননি পরিবারের লোকজন। বারবার ফোন করা হলেও কেউ তোলেননি ফোন। শনিবারও সারাদিন যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনও লাভ হয়নি।
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে পরিবারের সদস্যরা চলে আসেন ক্যানিং থানায়। বোন রুকসানা খাতুন সোজা চলে যান কোয়ার্টারে। দরজা খুলতেই দেখা যায় সিলিং থেকে গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় ঝুলছে রেশমির দেহ। দৃশ্য দেখে রুকসানা চিৎকার শুরু করলে বাকিরা ছুটে আসেন। ক্যানিং থানার পুলিশ দ্রুত দেহ উদ্ধার করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে দেন চিকিৎসকরা। শুরু হয় ময়নাতদন্তের তোড়জোড়।