• এসআইআর: ৩ দফা দাবি নিয়ে কমিশনে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল
    আজকাল | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক (সিইও)-এর সঙ্গে দেখা করল তৃণমূল কংগ্রেসের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল। রবিবার বিএলএ–২-দের সঙ্গে বৈঠকে অভিষেক ব্যানার্জি ঘোষণা করেছিলেন যে, এসআইআর শুনানিতে বয়স্কদের হেনস্তার প্রতিবাদে সোমবার সকালে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে যাবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার প্রতিনিধিদলের সদস্যেরা সিইও মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে দেখা করে তিন দফা দাবি পেশ করেন। জমা দেওয়া হয় স্মারকলিপিও। 

    সোমবার পার্থ ভৌমিক, শশী পাঁজা, বাপী হালদার, পুলক রায় এবং বিরবাহা হাঁসদা সমন্বিত পাঁচ সদস্যের দল সিইও দপ্তরে যান। এসআইআরের খসড়া তালিকা প্রকাশের পর থেকেই তৃণমূল অভিযোগ করছে যে, জাতীয় নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির বি টিম হিসেবে কাজ করছে। কমিশন বাংলার গণতন্ত্রের উপর নীরব হামলা চালিয়েছে। কোনও স্বচ্ছতা, বিজ্ঞপ্তি বা জবাবদিহি ছাড়াই গোপনে লক্ষ লক্ষ বৈধ ভোটারের নাম মুছে ফেলেছে।

    এই অভিযোগ এবং শুনানির প্রথম দিন থেকে বিভিন্ন জায়গায় বয়স্কদের হেনস্থার যে ছবি সামনে উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে সিইও দপ্তরে গিয়ে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে তিন দফা দাবি পেশ করেছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল-

    ১. অস্পষ্ট ও স্বেচ্ছাচারী ‘যৌক্তিক অসঙ্গতি’ তকমা দিয়ে চিহ্নিত ভোটারদের সম্পূর্ণ তালিকাটি অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে, যেখানে বিধানসভা কেন্দ্রভিত্তিক এবং বিভাগভিত্তিক সুস্পষ্ট বিভাজন থাকবে।

    ২. এই বিভাগটি তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত মানদণ্ড, পদ্ধতি এবং আইনি কর্তৃত্ব অবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।

    ৩. ৮৫ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ নাগরিক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য, এসআইআর-এর অধীনে সমস্ত নথি যাচাই, শুনানি এবং অন্যান্য কাজ তাঁদের বাড়িতেই সম্পন্ন করতে হবে।




    প্রসঙ্গত, বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর)-র ফলে পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা থেকে ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার নাম বাদ গিয়েছে। এরপরেই কমিশনের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছে বাংলার শাসকদল। বিপুল সংখ্যক নাম বাদ পড়ায় জাতীয় নির্বাচনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শনিবার অর্থাৎ গত ২৭ ডিসেম্বর সিইও দপ্তরে গিয়ে ডেপুটেশন জমা দিয়েছিল তৃণমূলের পাঁচ প্রতিনিধির দল। ওই দলে ছিলেন, মলয় ঘটক, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস, শশী পাঁজা এবং মানস ভুঁইয়া। 

    সোমবার এসআইআর সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাবে সাংসদ এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য কারও নাম না করে বলেন, “এসআইআর যদি সম্পূর্ণ না করা হয় তাহলে নির্বাচন করা যাবে না। এসআইআর-কে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে হবেই।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, শমীক এই কথার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন। পাশাপাশি বিজেপি রাজ্য সভাপতি জানান, “যদি নির্দিষ্ট দিনে ভোট না হয় তাহলে তৃণমূল দায়ী থাকবে।” এর পাশাপাশি এদিন মতুয়াদের ভোটাধিকার প্রশ্নে শমীক বলেন, “মতুয়ারা সবাই হই হই করেই ভোট দেবেন। এই মাটিতে আমার যা অধিকার মতুয়াদেরও সেই অধিকার।”

    অন্যদিকে, বয়স্কদের এসআইআর-এর শুনানির লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কের সৃষ্ট হয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের একটি মন্তব্যে। শুনানি কেন্দ্রে সাধারণ মানুষের হেনস্থার প্রতিবাদে সরব রয়েছে তৃণমূল। সুকান্ত সেই হেনস্থার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারলে, এসআইআর শুনানিতে যেতে সমস্যা কোথায়?” সুকান্তের এই মন্তব্যের ধিক্কার জানিয়েছে তৃণমূল।

     
  • Link to this news (আজকাল)