মৌসিনরামে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার জন্য বায়ুদূষণকেই কাঠগড়ায় তুলল গবেষণা
বর্তমান | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
বিশেষ সংবাদদাতা, শিলং: পৃথিবীর আর্দ্রতম স্থান কোনটা? প্রশ্ন করলেই উত্তর আসে মেঘালয়ের মৌসিনরাম। বহুকাল ধরেই বৃষ্টিপাতের জন্য বিখ্যাত পূর্ব খাসি হিল জেলার অন্তর্গত এই এলাকা। মেঘ-বৃষ্টি ও কুয়াশা মিলিয়ে একেবারে ছবির মতোই সুন্দর। কিন্তু সম্প্রতি প্রায় নীরবেই ‘আর্দ্রতম স্থানে’র তকমা খুইয়েছে মৌসিনরাম। কারণ, গত এক দশকে এই অঞ্চলে বছরে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমে গিয়েছে। এর জন্য অবশ্য বায়ুদূষণকেই দায়ী করছেন গবেষকরা। সম্প্রতি ‘জার্নাল অব দ্য ইন্ডিয়ান সোসাইটি অব রিমোট সেন্সিং’-এ প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মৌসিনরামে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ১০ হাজার ২৩৫ মিলিমিটার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৩৮ মিলিমিটারে। গবেষক মমতা দেবী এবং তাঁর সহযোগীরা বৃষ্টিপাত হ্রাসের কারণ হিসেবে বায়ুমণ্ডলের এরোসলের ঘনত্ব বৃদ্ধিকে উল্লেখ করেছেন। কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, গবেষণা চলাকালীনই মৌসিনরামের বাতাসে প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বায়ুমণ্ডলে ধূলিকণাজনিত দূষণ মাপার সূচক ‘এরোসল অপটিক্যাল ডেপথ’। প্রতি বছরই তা বাড়ছে। শুধু জ্বালানি ব্যবহার ও কারখানা থেকে নির্গত এই সূক্ষ্ম এরোসল ৯ শতাংশ বেড়েছে।
গবেষকদের মতে, এই ‘এরোসল’ অধিক ঘনত্বের মেঘ তৈরিতে বাধা দেয়। প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ব্যাঘাতের ফলেই মৌসিনরামে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। শীতকালে ও প্রাক-বর্ষায় এরোসলের কারণে বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায়। গবেষকদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের পূর্বাভাস উন্নত করতে এবং কার্যকর পরিবেশনীতি তৈরির জন্য এই এরোসল-মেঘ তৈরির প্রক্রিয়াকে বোঝা অত্যন্ত জরুরি।