• আরাবল্লি: নিজের রায়েই স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের
    বর্তমান | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি: আরাবল্লি বিতর্কে নয়া মোড়। গত ২০ নভেম্বর আরাবল্লি পর্বতমালা সংক্রান্ত কেন্দ্রের প্রস্তাবিত সংজ্ঞা মেনে নিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সোমবার সেই রায়ের উপরেই স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের অবসরকালীন বেঞ্চ।

    এদিনের শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, কমিটির তরফে সে সমস্ত সুপারিশ করা হয়েছে এবং আদালত আগে যে নির্দেশ দিয়েছে, সেগুলি স্থগিত রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান ও গুজরাত সরকারের তরফে নতুন করে খননের অনুমতির উপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে শীর্ষ আদালত। আগামী ২১ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে যাবতীয় জটিলতা মেটানোর জন্য সব পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, এই নির্দেশকে আমি স্বাগত জানাই। আরাবল্লি পর্বতমালার পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে আমরা আগের মতোই বদ্ধপরিকর। রায়কে স্বাগত জানিয়ে মন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করেছে কংগ্রেস। 

    আরাবল্লির কোন অংশকে ‘পাহাড়’ বলে বিবেচনা করা হবে, তা নিয়ে সম্প্রতি একটি সংজ্ঞা নির্ধারণ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নয়, আশপাশের এলাকার তুলনায় ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার ভূখণ্ডই আরাবল্লি পাহাড় বলে গণ্য হবে। দুই বা ততোধিক পাহাড় একে অপরের ৫০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত হলে সেগুলিকেও আরাবল্লি পর্বতমালার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের এই সংজ্ঞায় সিলমোহর দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের বেঞ্চ। এর পরেই দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। গত শনিবার এ বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট।

    সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, গত মাসে কমিটির প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টই। পালটা প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের মনে হয়, কমিটির রিপোর্ট ও আদালতের পর্যবেক্ষণকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কিছু স্বচ্ছ্বতার প্রয়োজন। সেই কারণেই তা কার্যকর করার আগে সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন বিশেষজ্ঞ মতামত অবশ্যই বিবেচনা করা প্রয়োজন। তার পরেই আগের নির্দেশ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানায় শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সেই কমিটি আরাবল্লি পর্বশ্রেণির সংজ্ঞা পুনরায় খতিয়ে দেখবে। আরাবল্লি নিয়ে আগের প্যানেল যা রিপোর্ট দিয়েছে, তা কার্যকর হলে পরিবেশের উপর কী প্রভাব পড়বে, সেটা বিচার করে দেখতে হবে। এই মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান ও গুজরাতকেও নিজের বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)