• উন্নাও ধর্ষণ: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জামিন খারিজ কুলদীপ সেঙ্গারের
    বর্তমান | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি: উন্নাওয়ে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারের জামিনের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। উন্নাওয়ে নাবালিকা ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তকে জামিন দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সোমবার সেই রায়ের উপরেই স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের অবসরকালীন বেঞ্চ। বিচারপতিরা বলেছেন, অত্যন্ত দক্ষ বিচারপতিও মাঝেমধ্যে ভুল করতে পারেন। আর সেটা সংশোধন করা বিচারেরই অঙ্গ। ধর্ষণ কাণ্ডের সাজা থেকে মুক্তি পেলেও নির্যাতিতার বাবার মৃত্যুর ঘটনায় জেলে রয়েছেন সেঙ্গার। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে আপাতত কারামুক্তি হচ্ছে না বহিষ্কৃত ওই বিজেপি নেতার। এবিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, যারা ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত, তাদের মালা পরিয়ে বরণ করে বিজেপি। আসলে ওরা নারী বিরোধী। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ন্যায়বিচারের রাস্তা প্রশস্ত করেছে। 

    গত মঙ্গলবার কুলদীপ সেঙ্গারের যাবজ্জীবন রদ করার পাশাপাশি জামিনও দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। বলা হয়, ইতিমধ্যে তিনি সাত বছর পাঁচ মাস সাজা কেটেছেন। তার পরেই দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। রাজধানীতে ধর্না থেকে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা ও তাঁর মা। এরইমাঝে গত শুক্রবার দিল্লি হাইকোরটের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। শনিবার দিল্লিতে সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে যাবতীয় অভিযোগ জানান উন্নাওয়ের নির্যাতিতা ও তাঁর মা। সেঙ্গারের জামিন খারিজের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন দুই আইনজীবী অঞ্জালে প্যাটেল ও পূজা শিল্পকরও। সিবিআই ও দুই আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে মামলার শুনানির সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট। 

    এদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। সিবিআইয়ের তরফে সওয়াল করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। দিল্লি হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ চান তিনি। শুনানি চলাকালীন আদালত জানায়, এখানে আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত। সাধারণত যখন কোনও দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি বা বিচারাধীন আসামীকে ট্রায়াল কোর্ট বা হাইকোর্টের আদেশে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়, তখন সেই ব্যক্তির বক্তব্য না শুনে সুপ্রিম কোর্ট সেই আদেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে না। কিন্তু এক্ষেত্রে উত্তরদাতা ব্যক্তি ইতিমধ্যে অন্য একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত ও দণ্ডিত হয়েছেন। সেই মামলায় তিনি জেলে রয়েছেন। এই বিশেষ পরিস্থিতিতে আমরা দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করছি। এই নির্দেশের ফলে কুলদীপ জেল থেকে ছাড়া পাবেন না বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশকে সিবিআই যে চ্যালেঞ্জ করেছে, তার প্রেক্ষিতে সেঙ্গারের জবাব তলবও করেছে শীর্ষ আদালত। চার সপ্তাহ পর ফের এই মামলার শুনানি।

    শীর্ষ আদালতের নির্দেশে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতা। তিনি বলেন, ‘কোনও আদালতের বিরুদ্ধে আমার কোনওরকম অভিযোগ নেই। আদালতের উপর আমার আস্থা রয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। প্রথম থেকেই সুবিচারের দাবিতে সরব ছিলাম। এই রায়ে আমি খুশি।’ ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য নতুন আইন চেয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী মুমতাজ প্যাটেল।
  • Link to this news (বর্তমান)