• প্রতি ৫ বিমানবন্দরের মধ্যে ধুঁকছে ১টি, ঘটা করে উদ্বোধনই সার, দিনে মাত্র এক বা দু’টি করে উড়ান
    বর্তমান | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি: সিকিমের পাকিয়ং, অসমের তেজপুর, কিংবা উত্তরপ্রদেশের আজমগড়, শ্রাবস্তী, কানপুর। এইসব অন্তর্দেশীয় বিমানবন্দরগুলির মিল কোথায়? প্রথমত সবকটির উদ্বোধন হয়েছে মোদি জমানায়। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্বোধন করেছেন এর মধ্যে কয়েকটির। দ্বিতীয়ত, সবকটি বিমানবন্দরই বর্তমানে অচল। অর্থাৎ সারাদিনে কোনও উড়ান পরিষেবাই নেই।  

    প্রায় একই অবস্থা আরও বেশ কিছু অন্তর্দেশীয় বিমানবন্দরের। সারাদিনে গড়ে দুটি বিমানও ওড়ে না সেগুলিতে। কোথাও তার চেয়েও কম। এমন উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এনেছে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এএআই)। রিপোর্টে ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বরের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ভারতের প্রতি পাঁচটির মধ্যে একটি অন্তর্দেশীয় বিমানবন্দর থেকে এই আট মাসে গড়ে প্রতিদিন মাত্র দুটি বা তারও কম সংখ্যক উড়ান চলাচল করেছে। দেশে বর্তমানে এধরনের বিমানবন্দরের সংখ্যা ১৪৩। যার মধ্যে ২৯টি বিমানবন্দরে ওই আট মাসে মোট উড়ানের সংখ্যা ছিল ৪৮০। অর্থাৎ দিনে গড়ে দুটিরও কম। সবচেয়ে করুণ পরিস্থিতি তেজপুর, আজমগড়, পাকিয়ং, শ্রাবস্তী ও কানপুর বিমানবন্দরের। রিপোর্ট বলছে, উল্লিখিত সময়ে এই পাঁচ বিমানবন্দরে একটিও অন্তর্দেশীয় বিমান ওড়েনি। এমন ৯টি বিমানবন্দর রয়েছে, যেখানে নভেম্বর মাসে একটিও উড়ান চলাচল করেনি।  যদি প্রতিদিন গড়ে তিনটি ফ্লাইটের মানদণ্ড ধরা হয়, তাহলে দেখা যাচ্ছে মাত্র ৪০টি বিমানবন্দর সেই সীমা অতিক্রম করতে পেরেছে। 

    পর্যটন শহর হিসেবে পরিচিত সিমলা বিমানবন্দরে এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৩৮৫টি ফ্লাইট চলেছে। যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে চালু হয় কুশিনগর বিমানবন্দর। সেখানে ওই আট মাসে মাত্র ছটি উড়ান পরিচালিত হয়েছে। যেখানে আগের বছরে এই সংখ্যাটি ছিল ৪৪। একইছবি  রাজস্থানের কোটায়। কোচিং হাব হিসেবে পরিচিত শহরে ২৪০ দিনে মাত্র ৩০টি উড়ান চলাচল করেছে। পিতল শিল্পের জন্য পরিচিত মোরাদাবাদ বিমানবন্দরে এই আট মাসে উড়া঩নের সংখ্যা মাত্র ছয়। যা গত বছরের তুলনায় ৯২ শতাংশেরও বেশি কম। প্রায় একই অবস্থা লুধিয়ানার। অর্থাৎ দেশের অধিকাংশ  অন্তর্দেশীয় বিমানবন্দরের হাল বেহাল। বিশেষজ্ঞদের মতে, যাত্রী চাহিদার অভাব, বিমান সংস্থার বাণিজ্যিক আগ্রহের ঘাটতি এবং পরিকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণেই এইসব ছোট ও আঞ্চলিক বিমানবন্দর কার্যত অচল হয়ে পড়ছে। এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে কেন্দ্র।
  • Link to this news (বর্তমান)