বিশ্বজিৎ মাইতি, বরানগর: প্রবল ঠান্ডার মধ্যেও বেলঘরিয়া, কামারহাটিজুড়ে বেড়ে চলেছে মশার দাপট। মশার এই বাড়বাড়ন্ত নিয়ে পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন একাধিক কাউন্সিলার। সেই সূত্রেই পুরসভার দাবি, ‘সুডা’ (স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি)-এর মশা মারার তেল ব্যবহার করে আশানুরূপ ফল মিলছে না। ওই তেল স্প্রে করার পরও লার্ভা মরছে না বহুক্ষেত্রে। সমস্যা জানিয়ে ‘সুডা’-কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মশার উপদ্রব রুখতে পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে কেনা হবে মশা মারার তেল। কিন্তু ‘সুডা’র পাঠানো মশা মারার তেলে সমস্যা নাকি তা সঠিকভাবে ব্যবহার করাই হয়নি—তা নিয়ে কামারহাটি পুরসভায় শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
কামারহাটি পুরসভার মোট ৩৫টি ওয়ার্ড। শীতেও মশার দাপট দেখা যাচ্ছে শহরের বিভিন্ন এলাকায়। সন্ধ্যায় মশার দল মাথার উপর ভনভন করে ঘিরে ধরছে। রাতে মশার অত্যাচারে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। চায়ের ঠেক হোক বা বৈঠকি আড্ডা—সবেতেই ছন্দপতন ঘটাচ্ছে মশককূল। পুরসভার ১ থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মশার সমস্যা খুব বেশি। অভিযোগ, আবর্জনা পড়ে পড়ে এলাকার নিকাশগিুলি অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। এই ধরনের ড্রেনগুলি মশার অভয়ারণ্য হয়ে উঠছে। সম্প্রতি বোর্ড মিটিংয়ে সেই সমস্যার কথা তুলে ধরেন ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার দেবযানী মুখোপাধ্যায়। বিভিন্ন খোলা ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার করার পাশাপাশি মশার আঁতুড়ঘরে তেল আরও বেশি করে স্প্রে করার দাবি জানান তিনি। তাঁর বক্তব্য সমর্থন করেন অন্যান্য কাউন্সিলার। সমস্যার কথা মেনে নেন পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের সিআইসি সৌমিত্র পুততুণ্ডু। তিনি বলেন, ‘পুরসভা মশার লার্ভা মারার তেল ও অন্যান্য সামগ্রী সুডা থেকে পায়। সেই তেল নিয়মিত স্প্রে করা হচ্ছে। কাউন্সিলাররা নিজেরাও সেই কাজ দেখভাল করছেন। কিন্তু বহু সময় দেখা যাচ্ছে, ওই তেল ছড়ানোর পরও আশাপ্রদ কাজ হচ্ছে না। সমস্যার বিষয়টি সুডাকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।’ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, ‘পরিস্থিতি অনুধাবন করে পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে মশা মারার তেল কেনা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। মশার দাপট বেশি, এমন এলাকায় ওই তেল দ্রুত স্প্রে করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’ সৌমিত্রবাবু আরও বলেন, ‘শহরের সর্বত্র মশার দাপট রয়েছে, এমন নয়। কিছু জায়গায় সমস্যা আছে। খোলা ড্রেন সকালে পরিষ্কারের পর বিকেলে ফের আবর্জনায় ভরে যাচ্ছে। এই অবস্থায় পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে মশা মারার তেল কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’