অন্যের ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতিয়ে নিজের ছবি, তেল ভর্তি ট্যাঙ্কার চুরি করে ধৃত অভিযুক্ত
বর্তমান | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অন্যের ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতিয়ে তাতে নিজের ছবি লাগিয়ে সয়াবিন তেল ভর্তি ট্যাঙ্কার নিয়ে উধাও হয়েছিলেন এক লরির চালক। বিহার থেকে রাজেশ কুমার নামে ওই চালককে গ্রেফতার করেছে ভবানীপুর থানা। উদ্ধার ট্যাঙ্কারটি। তবে সেটি খালি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়ায় সয়াবিন তেলের কারখানা থেকে ২৩ মেট্রিক টন তেল নেপালের বীরনগরে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। একটি ট্যাঙ্কার কোম্পানি এই মাল নিয়ে যাওয়ার বরাত পায়। ৩০ নভেম্বর ২৩ মেট্রিক টন সয়াবিন তেল নিয়ে ট্যাঙ্কারটি বীরনগরের দিকে রওনা দেয়। পয়লা ডিসেম্বর পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু না পেয়ে সংস্থার তরফে বারবার চালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্ত. চালকের মোবাইল বন্ধ ছিল। তেল প্রস্তুতকারক সংস্থাটির অফিস কলকাতার ভবানীপুরে। ভবানীপুর থানায় অভিযোগ জানানো হয়। পুলিশ কেস রুজু করে। তদন্ত শুরু হয়।
পুলিশ লরির নম্বর, চালকের মোবাইল নম্বর জোগাড় করে। যে কারখানা থেকে মাল বেরিয়েছিল সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নেয়। তাতে গাড়ির চালকের ছবি ধরা পড়ে। যে কোম্পানি থেকে ট্যাঙ্কার ভাড়া নেওয়া হয়েছিল সেখান থেকে চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের নথি জোগাড় করে পুলিশ। সেখানে থাকা ছবির সঙ্গে তেল প্রস্তুতকারক কোম্পানির কারখানার সিসি ক্যামেরায় ট্যাঙ্কার চালকের ছবির ফারাক ধরা পড়ে। এখান থেকেই তদন্তকারীদের সন্দেহের শুরু। দেখা যায়, লাইসেন্সটি ভুষণ ঝা নামে এক ব্যক্তির। তাঁর নথি জোগাড় করে দেখা যায় ক্যামেরার ছবির সঙ্গে লাইসেন্সে থাকা ফটোর কোনও মিল নেই। তদন্তে উঠে আসে অভিযুক্ত চালকের পাঁচটি মোবাইল ও ১১টি সিম কার্ড রয়েছে। প্রতিটি সিম বিভিন্ন ব্যক্তির নামে তোলা। সেই সমস্ত নম্বর জোগাড় করে খতিয়ে দেখেন অফিসাররা। একটি নম্বরের অবস্থান দেখা যায় বিহারে নওদায়। সেখানে হানা দিয়ে পুলিশ রাজেশ কুমারকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স মেলে। দেখা যায় সেটি ভুষণ ঝা নামে এক ব্যক্তির। কিন্তু ছবিটি রাজেশ কুমারের।
ধৃতকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, নওদার বাসিন্দা ভুষণ ঝা নামে এক চালকের লাইসেন্স জোগাড় করে। সেখানে তাঁর ছবির জায়গায় নিজের ছবি লাগিয়ে দেয়। সেটি সে জমা দেয় ট্যাঙ্কার কোম্পানির কাছে। প্রথম থেকেই তার উদ্দেশ্য ছিল সয়াবিন তেল হাতিয়ে নেওয়া। সেই কারণে অন্যের ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করছিল। যাতে সে ধরা না পড়ে। সেই পরিকল্পনা মতোই গোটা কাজ করে। ভিন রাজ্যের কোথায় সে এই তেল বিক্রি করেছে ধৃতকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার তার দুই সহযোগী।