• ১৩ বছর পর রেকর্ড, শীতের দাপট কমবে কবে? জানাল আবহাওয়া দফতর
    আজ তক | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ১৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ঠান্ডা দিন কাটাল কলকাতা। শুধু ভোর বা রাতেই নয়, সোমবার বিকেলেও হাড় কাঁপানো ঠান্ডা অনুভব করেছেন শহরবাসী। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে আসে মাত্র ১৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের স্বাভাবিক তাপমাত্রার তুলনায় প্রায় সাত ডিগ্রি কম।

    হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বরের পর এই প্রথম আলিপুরে দিনের তাপমাত্রা এতটা নিচে নামল। সে দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১৩.৫ ডিগ্রিতে, যা এই সময়ের জন্য মোটামুটি স্বাভাবিক হলেও দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান পাঁচ ডিগ্রিরও কম থাকায় সারাদিন ধরেই ঠান্ডার দাপট স্পষ্ট ছিল।

    আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবার দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ২১ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ১৩ ডিগ্রির আশপাশে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাতেও বড়সড় স্বস্তি মিলবে না, কারণ তাপমাত্রা এখনও স্বাভাবিকের তুলনায় যথেষ্ট কম থাকবে।

    আবহাওয়াবিদদের মতে, সোমবার দিনের বেলায় পারদ এতটা নামার মূল কারণ ছিল নিম্ন বায়ুমণ্ডলে কুয়াশা ও অতিরিক্ত আর্দ্রতার আধিক্য। এর ফলে নিচু স্তরে মেঘ তৈরি হয় এবং সকাল থেকে দীর্ঘ সময় সূর্য আড়ালেই থাকে। কুয়াশা কিছুটা কাটলেও দিনের বেলায় সূর্যের তাপ কার্যত অনুভূত হয়নি।

    আলিপুর আবহাওয়া কেন্দ্রের প্রধান এইচ. আর. বিশ্বাস জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা আর্দ্র বাতাস বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে বাংলাদেশের উপর দিয়ে রাজ্যে ঢুকছে। এর ফলে বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরে আর্দ্রতা বেড়েছে এবং কুয়াশা ও মেঘের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি, ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা ঠান্ডা বাতাস ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি সক্রিয় থাকায় রাতের তাপমাত্রাও কিছুটা কমে গেছে।

    আর্দ্রতার প্রভাব স্পষ্ট ছিল সোমবারের আবহাওয়ায়। এ দিন শহরে সর্বনিম্ন আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭১ শতাংশ। সাধারণত শুষ্ক উত্তর-পশ্চিমি হাওয়া সক্রিয় থাকলে এই আর্দ্রতা ৪৫ শতাংশের নীচে নেমে যায়।

    আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবার কলকাতার আকাশ মূলত পরিষ্কার ও মেঘমুক্ত থাকবে। তবে সকালের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা থাকতে পারে। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে আপাতত শুষ্ক আবহাওয়া বজায় থাকবে বলেই পূর্বাভাস। হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায়, যার ফলে দৃশ্যমানতা ৯৯৯ মিটার থেকে কমে ২০০ মিটার পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।

    উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে কুয়াশা নিয়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। দার্জিলিং, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুরে মঙ্গলবার ঘন কুয়াশার সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে দৃশ্যমানতা ১৯৯ মিটার থেকে নেমে ৫০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। কোচবিহারের কিছু এলাকায় বিকেলের দিকে কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

    এছাড়াও, বুধবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে দার্জিলিঙে হালকা বৃষ্টি এবং তুষারপাতের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে হাওয়া অফিস।


     
  • Link to this news (আজ তক)