আর নেই ‘পুতুল’! সাতসকালে খালেদার প্রয়াণ সংবাদে মনখারাপ জলপাইগুড়িবাসীর
প্রতিদিন | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বছরশেষের শীতের সকালটা যেন আরও ম্লান জলপাইগুড়ি শহরে। মঙ্গলে অমঙ্গল সংবাদ! এলাকার ভূমিকন্যা পুতুল, যিনি অধিক পরিচিত বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নামে, তাঁর প্রয়াণের খবর পৌঁছতেই কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল আরও আবছা হয়ে গেল জলপাইগুড়ি শহরে। ১৯৪৫ সালে এখানেই যে জন্মেছিলেন পুতুল! বাবার চাকরি, তাঁর পড়াশোনা এখানকারই সুনীতিবালা সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরে একাত্তরের অশান্ত সময়ে সম্পত্তি বিনিময় করে ওপারে চলে যায় খালেদা জিয়ার পরিবার। কিন্তু অতীত সূত্র মুছে যায়নি এখনও। আর সেই সূত্রেই খালেদার প্রয়াণে কার্যত শোকস্তব্ধ জলপাইগুড়ি শহরের নয়াবস্তি। স্কুলে তাঁর স্মরণসভার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সুনীতিবালা সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়েরল প্রধান শিক্ষক অরূপ দে।
তখন অবিভক্ত দুই বাংলার দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত ছিল জলপাইগুড়ি শহর। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সেই শহরে জন্ম হয় খালেদা জিয়ার। ছোটবেলায় তাঁকে ‘পুতুল’ বলে ডাকতেন সকলে। চা কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচার সংস্থা ‘দাশ অ্যান্ড কোম্পানি’তে চাকরি করতেন বাবা মহম্মদ ইসকান্দর। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে এক হিন্দু পরিবারের সঙ্গে জমি বিনিময় করে খালেদারা চলে যান সেখানে। আর জলপাইগুড়ির ওই বাড়িতে গিয়ে বসবাস শুরু করে ওপারের চক্রবর্তী পরিবার। পরে আর খালেদার পরিবার জলপাইগুড়িতে ফেরেনি।
মঙ্গলবার সকালে নয়াবস্তির সেই পাড়ায় দাঁড়িয়ে এসব কথাই বলছিলেন এলাকার বাসিন্দা নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত। আরেক বাসিন্দা জানালেন, খালেদারা যে বাড়িতে থাকতেন, তার পাশের বাড়িটিই তাঁর। ইদানিং বাংলাদেশ থেকে আত্মীয়রা এলে তাঁর বাড়িতে ওঠেন। আগের বাড়িটি দেখেশুনে ফিরে যান। আজ তাই খালেদার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তাঁদের সকলের মনখারাপ। বলছেন, ”রাজনীতির কিছু ব্যাপার নয়। আমাদের এখানকারই বাসিন্দা ছিল ওরা। তাই আজ আমাদের মন ভারাক্রান্ত।”
জলপাইগুড়ির যে স্কুলে পড়তেন খালেদা, সেই সুনীতিবালা সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরূপ দে জানিয়েছেন, ”আমি শুনেছি তাঁর কথা। ইতিহাস ঘেঁটে জানতে পেরেছি, এখানে তিনি পড়তেন। এখন তো স্কুল বন্ধ। তাই তাঁর স্মরণসভা নিয়ে কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলব। দিন ঠিক করা হবে।”