• মেসির অনুষ্ঠানে অশান্তি, ভাঙচুর হওয়া যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সংস্কার শুরু হচ্ছে জানুয়ারি থেকেই, দায়িত্বে পূর্ত দফতর
    আনন্দবাজার | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • বিশ্বকাপ জয়ী লিয়োনেল মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে দর্শকদের চরম বিশৃঙ্খলার সাক্ষী থেকেছে সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। সেই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কলকাতার গর্বের এই স্টেডিয়াম। দুই সপ্তাহের মধ্যেই স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। ঘটনার পরেই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীকে নিয়ে কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, স্টেডিয়ামে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে দায়িত্ব দেওয়া হয় পূর্ত দফতরকে। সেই কাজ সম্পন্ন করার পর নবান্নকে একটি রিপোর্ট দেয় পূর্ত দফতর, এমনটাই প্রশাসন সূত্রে খবর। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সম্প্রতি পূর্ত দফতরকে সংস্কারের কাজে হাত দিতে বলেছেন নবান্নের শীর্ষ আধিকারিকেরা।

    তবে যেহেতু ভাঙচুরের ঘটনার পর উচ্চপর্যায়ের কমিটি এই ঘটনার তদন্ত করছিল, তাই তাদের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করা সম্ভব ছিল না বলেই জানাচ্ছেন পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক। তাই সেই কমিটি তদন্তের কাজ শেষ করার পর সংস্কারের বিষয়ে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে পূর্ত দফতর। নবান্ন সূত্রে খবর, সম্প্রতি পুলিশের তরফে পূর্ত দফতরকে সংস্কারের কাজ শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাই আর কালবিলম্ব না-করে নতুন বছরের প্রথম মাস থেকেই সংস্কারের কাজে হাত দিচ্ছে পূর্ত দফতর। দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জানুয়ারি মাসে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হবে। যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি আমাদের নজরে এসেছে, তাতে এটুকু বলতে পারি এ ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করব, যাতে যুবভারতীতে দ্রুতই আবার খেলাধুলা শুরু করা যায়। কারণ, আমরা জানি, পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়াজগতের সঙ্গে যুবভারতীর সম্পর্ক কতটা দৃঢ়। তাই আমাদের চেষ্টা হবে, যাতে যত দ্রুত সম্ভব আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামকে আবার ক্রীড়া দফতরের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া যায়।’’

    পূর্ত দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ১৩ ডিসেম্বর মেসিকে দেখতে না পেয়ে দর্শকদেরই বসার বহু বাকেট চেয়ার ভেঙে ফেলা হয়। এমনকি স্টেডিয়ামের বেশ কিছু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় লোহার গ্রিল। খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে যাওয়ার রাস্তার উপরের ছাদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মূল্যায়নের সময় জানতে পেরেছেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা। এ ছাড়াও দেখা গিয়েছে, ফুলের টব থেকে শুরু করে মাঠে পাতার ম্যাট নিয়ে চলে গিয়েছে উত্তেজিত জনতা। তাই প্রায় অনেক কিছুই নতুন করে গড়ে দিতে হবে পূর্ত দফতরকে।

    উল্লেখ্য, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন থাকে ক্রীড়া দফতরের অধীনে। তবে প্রথম থেকেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বে থাকে পূর্ত দফতর। তাই নতুন করে সংস্কারের কাজে তাদের খুব একটা ঝুঁকি পোহাতে হবে না বলেই মনে করছেন পূর্ত দফতরের শীর্ষ আধিকারিকেরা। এই সংস্কারের কাজ কবে শেষ করা সম্ভব হবে, সেই দিনক্ষণ অবশ্য জানাতে নারাজ পূর্ত দফতর। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং এখন ক্রীড়া দফতরের দায়িত্বে। তাই যাবতীয় কাজকর্ম তাঁর তত্ত্বাবধানে করবে পূর্ত দফতর। যত ক্ষণ না সংস্কারের কাজে তিনি সন্তুষ্ট হচ্ছেন, তত ক্ষণ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ পূর্ত দফতরের কোনও আধিকারিক।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)