• ‘তৃণমূলের মন্ত্রীদের জেলে যাওয়াই দুর্নীতির প্রমাণ’, ১৫ এপ্রিলের পরে বিজেপির সরকার গড়ার দাবি অমিত শাহের
    এই সময় | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • দুর্নীতি ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আগেও সরব হয়েছে বিজেপি। কিন্তু কলকাতায় মঙ্গলবারের সাংবাদিক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে ভাবে ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক’-দের নাম ধরে ধরে জেলযাত্রার উদাহরণ দিলেন, তা এক প্রকার বিরল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। স্পষ্ট ভাষায় বলে দিলেন, ‘রাজ্য সরকার গলা পর্যন্ত দুর্নীতিতে ডুবে আছে। সেই জন্যই তো তৃণমূলের নেতারা জেল খেটেছেন।’ তবে শাহকে পাল্টা আক্রমণ করেছে তৃণমূলও।

    ভয়, দুর্নীতি আর কুশাসন — এই ত্রিভূজ দিয়েই রাজ্য সরকারকে ঘিরে ধরতে চেয়েছেন শাহ। তাঁর কথায়, ‘মন্ত্রীর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, জীবনকৃষ্ণ সাহা, মানিক ভট্টাচার্যরা জেল খেটেছেন। রোজভ্যালি, মনরেগা, পিএম আবাস, SSC মিলিয়ে যত দুর্নীতি হয়েছে, গুনতে বসলে রাত পেরিয়ে যাবে। এর পরে দুর্নীতি হয়নি, এটা বলার আর কোনও জায়গা নেই।’

    এই দুর্নীতি দেখতে দেখতে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যে তিতিবিরক্ত, তাতে কোনও সন্দেহ নেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। তিনি দাবি করেন, ‘১৫ এপ্রিলের পর বিজেপির সরকার আসছে।’ কী ভাবে সেটা সম্ভব? তা ভোট শতকরার হিসেব দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন শাহ। তাঁর কথায়, ‘২০১৪ সালে ১৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। মাত্র ২টো আসন জিতেছিল। ২০১৬ সালে তা ১০ শতাংশে নেমে যায়। এর পরে ২০১৯ সালে ৪১ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৮টি লোকসভা আসনে জিতি আমরা। ২০২১-র বিধানসভা ভোটে ৩৮ শতাংশ ভোট পাই। ৭৭টি আসনে জিতি। ২০২৪-এ আমরা ৩৯ শতাংশ ভোট পাই। এই ধারাবাহিকতাই বলে দিচ্ছে, ভোট বাড়ছে, ২০২৬-এ বিজেপির সরকার আসছে।’

    মহিলাদের সুরক্ষা দিতেও রাজ্য সরকার ব্যর্থ বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মেয়েদের রাত ৭টার পরে বেরতে নিষেধ করে দিলেন। আমরা কি মোগল যুগে আছি? মেয়েরা যখন খুশি, যেমন খুশি বেরবে। আপনি বারণ করার কে?’ দুর্নীতি আর তোষণের কারণে বাংলার মানুষ বীতশ্রদ্ধ বলেও দাবি করেন তিনি। শাহের কথায়, ‘২০২৬-এ পালাবদল হচ্ছেই। দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়বে বিজেপি।’

    তবে নারী নির্যাতন নিয়ে শাহের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। তাঁর কথায়, ‘বাংলার কোটি কোটি মেয়ে দুর্গাপুজো, ক্রিসমাসে ঘুরেছেন। কোনও অসুবিধা হয়নি। নববর্ষেও ঘুরবেন।’ পাশাপাশি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মহিলাদের অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি, ‘কুলদীপ সেনগারের জামিনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। অলিম্পিক্স পদকজয়ী মহিলা বক্সারদের হেনস্থা করছেন আপনার মন্ত্রী। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেননি।’

    একই সঙ্গে বাংলায় শিল্পের পরিসংখ্যানও দেন শশী। তাঁর কথায়, ‘২০১১ থেকে ১৩.৮ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে বাংলায়। সিমেন্ট কারখানা, রঙের কারখানা, রেলওয়ে ওয়াগন তৈরির কারখানা — প্রচুর লগ্নি হচ্ছে। MSME-তে গোটা দেশের মধ্যে বাংলা দ্বিতীয়। সেগুলো আপনাদের চোখে পড়ছে না।’

  • Link to this news (এই সময়)