'জয় গোস্বামীর মতো মানুষকেও যদি...', কী বলছে তৃণমূল?
আজকাল | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক জয় গোস্বামীকে ডাক এসআইআর শুনানির জন্য। অথচ নাম এসেছিল খসড়া তালিকায়। নিশ্চিন্ত ছিল পরিবার। তার মাঝেই সোমবার ফোন করে তাঁকে এবং কন্যা দেবত্রীকে ২ জানুয়ারি শুনানির জন্য ডাকা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনায় জয়ের স্ত্রী, কাবেরী গোস্বামী তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য-'আমার বিজেপির কাছে প্রশ্ন, এই হেনস্থার মানে কী? ভাবুন, জয়কে যদি এই হেনস্থার সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হচ্ছে।' সঙ্গেই জানান, জয়কে যে ২ তারিখের হিয়ারিংয়ে নিয়ে যেতে পারবেন না, তাও স্পষ্ট জানিয়েছেন বিএলও'কে। যদিও বিএলও তার উত্তরে কিছুই জানাননি। এখন অপেক্ষা, এর পর কী করতে হবে, সেদিকে।
ইতিমধ্যেই শাসক দল, তৃণমূল কংগ্রেস এই শুনানি প্রক্রিয়ায়, বয়স্ক-অসুস্থদের ডাক নিয়ে সুর চড়িয়েছে। কবিকে তলবের প্রসঙ্গে, আজকাল ডট ইন যোগাযোগ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ, সাংসদ পার্থ ভৌমিক, বর্ষীয়ান বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যর সঙ্গে।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলছেন, 'এই ধরনের পরিকল্পত হেনস্থা জাতীয় নির্বাচন কমিশন বিজেপির নির্দেশে বারবার করছে। তারা তো বেশি নাম বাদ দিতে পারেনি। মাত্র ৫৮ লক্ষ, যেটা ডবল ইঞ্জিন সরকারের তুলনায় অনেক কম। এখন টার্গেট ১ লক্ষ ৩৬ হাজার। যাদের নামের তালিকা দিচ্ছে না ওরা, বয়স্ক-অসুস্থ মানুষদের যে কোনও ছুতোয় ডেকে পাঠাচ্ছে। তৃণমূল প্রতিবাদ করায় একটা সার্কুলা এসেছে বটে। তবে জয় গোস্বামীর মতো মানুষকেও যদি ডেকে পাঠায়, কী বলি। মানুষ বয়স্ক, অসুস্থ। না গেলেই, নাম কেটে দেবে ওরা। এটা পরিকল্পিত চক্রান্ত। নেত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশে, অভিষেক ব্যানার্জির নির্দেশে তৃণমূল কংগ্রেস এই প্রক্রিয়ায় আপত্তি জানিয়েছে। প্রয়োজনে বাড়িতে যাক, ভার্চুয়ালি হিয়ারিং করুক। সুপ্রিম কোর্টে, হাই কোর্টেও তো ভার্চুয়াল হিয়ারিং হয়। অসুস্থ, পরিযায়ী, প্রবাসীদের ভার্চুয়াল হিয়ারিং করুক। এভাবে জয় গোস্বামীর মতো মানুষদের বিড়ম্বনায় ফেলা, বিব্রত করা, এসব নাম কেটে দেওয়ার চক্রান্ত।'
সাংসদ পার্থ ভৌমিকের বক্তব্য 'আমাদের, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিবাদ তো এটা নিয়েই। সাধারণ মানুষদের, বিশিষ্ট মানুষদের যেমন হেনস্থা করা হচ্ছে, আমরা তো এর বিরুদ্ধেই বলছি। বয়স্ক, অসুস্থ মানুষদের বাড়িতে যান বিএলওরা। প্রয়োজনে ভার্চুয়াল শুনানি হোক। এটা অন্যায় হচ্ছে।বাংলার প্রতি এই যে অন্যায় করছে, এর ফলাফল ২৬-এর নির্বাচনে পাবে বিজেপি।'
বর্ষীয়ান বাম নেতা, সুজন চক্রবর্তী বলছেন, 'আগেও বারবার বলেছি, এসআইআর প্রক্রিয়া যদি নির্ভুল ভোটার লিস্টের জন্য হলে এত বাহানা করতে হয় না, যা নির্বাচন কমিশন করছে। বহু মানুষের অসুবিধে হচ্ছে। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি।'
অন্যদিকে এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলছেন, 'জয় গোস্বামীকে ডাকাছে আমি কী করব তাতে? আলাদা করে মন্তব্য করার নেই এই বিষয়ে। কারণ, অনেক মানুষকে ডাকছে। অনেক মানুষের হয়রানি হচ্ছে। এসআইআর সামগ্রিকভাবে বাংলায় যেভাবে কার্যকর করা হচ্ছে, তাতে বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরিস্কার। যদি ভাবতে হয় এই বিষয়ে, আশঙ্কিত হতে হয়, তাহলে সকলের কথা একসঙ্গে ভাবাই ভাল।'