সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম নির্দেশে খননকাজ বন্ধ হয়েছে আরাবল্লীতে। সুপ্রিম কোর্টের ২০ নভেম্বরের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এবার, আরাবল্লীতে খনন প্রসঙ্গে হরিয়ানা সরকারকে তোপ দেগেছেন কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা। কংগ্রেস সাংসদ মঙ্গলবার অভিযোগ করেছেন হরিয়ানা সরকার খনি মাফিয়াদের বিনা বাধায় খননের সুযোগ দিয়েছে। এতে, আরাবল্লী পাহাড়ের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।
সুরজেওয়ালা বলেন, হরিয়ানার মহেন্দ্রগড় জেলার উসমাপুর গ্রামে নির্বিচারে খনির কাজ চলছে। সুরজেওয়ালার অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ আগের আদেশ স্থগিত করলেও, হরিয়ানার আরাবল্লী পর্বতমালায় খনিতে বিস্ফোরণ এবং খননের উপর সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগ, অনিয়ন্ত্রিত খননের ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এই এলাকাগুলিতে তার ফলে গ্রাম এবং আবাসিক এলাকাগুলি মানুষের বসবাসের জন্য একদম নিরাপদ নয়।
তাঁর দাবি, গ্রাম থেকে মাত্র ৩৫০ মিটার দূরে খনিতে বিস্ফোরণ চলছে। প্রতিদিন প্রায় ১২টি বিস্ফোরণ হচ্ছে এবং ৯০০ টিরও বেশি ডাম্পার প্রতিদিন খনিজ পরিবহন করছে।
তাঁর দাবি, বিস্ফোরণের ফলে এলাকার ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে, তীব্র ধুলো এবং দূষণ বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর সমস্যা তৈরি করেছে। তাঁর দাবি গবাদি পশুরাও অসুস্থতার হাত থেকে রেহাই পায়নি।
কংগ্রেস নেতা বলেন, ৩৩.১০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে খনির অনুমতি দেওয়া হয়। তাঁর দাবি, এরই অপব্যবহার করা হচ্ছে এবং বিজেপি অবৈধ খনন উপেক্ষা করে পরিবেশ ও মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
সুপ্রিম কোর্টে আরাবল্লী মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, আদালতের নির্দেশকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এই বিষয়ে আরও স্পষ্টতার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি জানান, ২০ নভেম্বরের নির্দেশ কার্যকর করার আগে নিরপেক্ষ এবং নিখুঁত রিপোর্টের প্রয়োজন রয়েছে। খনির পরিবেশগত প্রভাব ও পাহাড়ের বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা ও সংরক্ষণের মতো বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিয়ে একটি উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয় আদালতের তরফে। একইসঙ্গে বিচারপতি জানান, এই বিশেষ কমিটির রিপোর্ট সামনে না আসা পর্যন্ত আরাবল্লী রেঞ্জে কোনওরকম খনন কাজ চালানো যাবে না। এছাড়াও, কেন্দ্র ও আরাবল্লী রেঞ্জে থাকা রাজ্যগুলিকে নোটিস পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত। গত ২০ নভেম্বর শীর্ষ আদালতের একটি রায়ে বলা হয়েছিল, আরাবল্লী পাহাড়ের ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার ভূমি ও আশপাশের ঢাল, সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে। এগুলিকেই আরাবল্লী পাহাড়শ্রেণির অংশ হিসাবে গণ্য করা হবে যার অর্থ এটাই যে ১০০ মিটারের কম পাহাড়গুলির সংরক্ষণের আওতায় থাকবে না। অথচ আরাবল্লীর ৯০ শতাংশ পাহাড়ের উচ্চতা ১০০ মিটারের নিচে।