ঘণ্টায় ১৩০ কিমি গতিতে মাত্র ৬০০ কিলোমিটার ট্র্যাকে ছুটতে পারে ট্রেন, দাবি রেলেরই পরিসংখ্যানে
বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মাত্র ৬০০ কিলোমিটার রেলওয়ে ট্র্যাকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩০ কিমি গতিতে ছুটতে সক্ষম দূরপাল্লার মেল, এক্সপ্রেস ট্রেন। সারা দেশের চার হাজার কিলোমিটারের সামান্য কিছু বেশি অংশের রেলওয়ে ট্র্যাকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিমির অধিক গতিতে চলতেই পারে না মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনগুলি। অর্থাৎ, দেশব্যাপী যত কিলোমিটার রেল লাইন আছে, তার একটি বিপুল অংশেই দূরপাল্লার মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটারেরও কম। রেলের একটি পরিসংখ্যানেই এহেন ছবি সামনে এসেছে।
অভিযোগ, বিশেষত উত্তর ভারতে কুয়াশার দাপটে এমনিতেই বছরের বেশ কিছুটা সময় ট্রেনের গতি অত্যন্ত কম থাকে। ফলে মাত্রাতিরিক্ত ট্রেন লেটের ঘটনা ঘটে। কিন্তু অন্যান্য সময়ও সার্বিকভাবে ট্রেনের গতি কম থাকার ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ রেল যাত্রীদের। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের দাবি, উচ্চ গতির ক্ষমতাসম্পন্ন রেল লাইন না থাকাই এর জন্য দায়ী। এরই পাশাপাশি রেল লাইনের নবীকরণও যদি ঠিকমতো হত, তাহলেও এই ছবি কিছুটা ভিন্ন হতে পারত। এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দীর্ঘদিন ধরেই দেশে একের পর এক সেমি-হাইস্পিড ট্রেন চালাচ্ছে রেলমন্ত্রক। এমনকি নতুন বছরে দেশের প্রথম হাইস্পিড ট্রেনও চালু হয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে দেশের মাত্র ৬০০ কিলোমিটার রেল লাইন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩০ কিমি গতিতে ট্রেন চলাচলের উপযোগী—এই তথ্য প্রত্যাশিত কারণেই উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। উল্লেখ্য, সারা দেশে রেলওয়ে ট্র্যাকের পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ ১৩ হাজার কিলোমিটার।
যদিও নতুন রেল লাইন পাতা কিংবা রেলওয়ে ট্র্যাকের নবীকরণ যে উল্লেখযোগ্য হারে হচ্ছে না, সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে রেল। মন্ত্রক জানিয়েছে, গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র আট মাসের মধ্যে সারা দেশে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার নতুন রেল লাইন চালু করা হয়েছে। সাড়ে সাত হাজার কিলোমিটার রেল লাইনের সম্পূর্ণ নবীকরণ হয়েছে। এবং একইসঙ্গে রেলমন্ত্রক জানিয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে, অর্থাৎ কংগ্রেস আমলে প্রতিদিন মাত্র ৪.২ কিলোমিটার নতুন রেল লাইন পাতা হতো। ২০১৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে, অর্থাৎ মোদি জমানায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮.৫৭ কিলোমিটার নতুন রেল লাইন পাতা হচ্ছে।