• অসমে ‘ফরেস্ট ম্যান অব ইন্ডিয়া’র বনাঞ্চলে আগুন লাগাল দুষ্কৃতীরা
    বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • বিশেষ সংবাদদাতা, গুয়াহাটি: যাদব পায়েং। ‘ফরেস্ট ম্যান অব ইন্ডিয়া’ নামেই খ্যাত অসমের এই পরিবেশবিদ। সবুজ বাঁচিয়ে প্রকৃতিতে ভারসাম্য ফেরানোই তাঁর লড়াই। স্বীকৃতিস্বরূপ মিলেছে পদ্মশ্রীও। কিন্তু ডবল ইঞ্জিন তথা হিমন্তের রাজ্যে পুড়ল তাঁর সেই লড়াইয়ের ফসল। অভিযোগ, মাজুলি জেলায় ব্রহ্মপুত্র নদীর বালুচরে ‘মোলাই কাঠোনি ২.০’ প্রকল্পের আওতায় গড়ে ওঠা জঙ্গলের একটি অংশ রবিবার রাতে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের তির স্থানীয় বালি মাফিয়াদের দিকে। কারণ, দীর্ঘদিন ধরেই মাজুলির চর থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন তিনি। 

    নদীর চরের ভাঙন রুখতে ২০২২ সালে ‘মোলাই কাঠোনি ২.০’ প্রকল্প শুরু হয়। মেয়ে মুনমি পায়েং এবং ৭০ জন স্বেচ্ছাসেবককে সঙ্গে নিয়ে প্রায় ৭.৫ বিঘা জমিতে ওই বনাঞ্চল তৈরি করেছিলেন যাদব। দেশীয় এবং বন্যা-সহনশীল প্রজাতি মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল সেখানে। যাদব বলেন, ‘রবিবার কেউ বা কারা জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেয়। জানতে পেরেই আমরা পৌঁছই সেখানে। পুরো জঙ্গলকে আগুন গ্রাস করতে পারেনি, কিন্তু ব্যাপকভাবে তা ক্ষতিগ্রস্ত। বহু পাখি ও ছোট প্রাণী মারা গিয়েছে আগুনে পুড়ে।’ মুনমি পায়েং বলেন, ‘আমাদের কাজ প্রকৃতিকে রক্ষা করা। ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানো হয়েছে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের শাস্তি চাই।’ অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার হোরেন টোকবি বলেন, ‘পুলিশ এবং বনদপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’

    বনাঞ্চলে এহেন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে হিমন্তের রাজ্যে। অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি গৌরব গগৈ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকারি মদত ছাড়া কোনও দুষ্কৃতী এই বনাঞ্চল ধ্বংস করার সাহস দেখাতে পারে না। বিশ্বখ্যাত বনকর্মী যাদব পায়েংয়ের জঙ্গলে আগুন লাগানোর বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়। মোলাই কাঠোনি অঞ্চলের পরিবেশগত সংবেদনশীলতা বিবেচনা করে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই এলাকায় বালি উত্তোলনের বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হোক। প্রয়োজেন লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।’
  • Link to this news (বর্তমান)