• ফের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাগুলির সংযুক্তিকরণের ভাবনা কেন্দ্রের, ভবিষত্যে কি বেসরকারিকরণের লক্ষ্য?
    বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ২০১৮ সালে এই প্রস্তাব প্রথম দিয়েছিলেন প্রয়াত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সরকারি বিমা সংস্থাগুলির সংযুক্তিকরণ ঘটিয়ে একটিই সংস্থায় পর্যবসিত করা। মাথাভারি প্রশাসন চালানোর তিনি বিপক্ষে ছিলেন। সেই প্রস্তাব নিয়ে কিছুদিন আলোচনা হয়। তাঁর প্রস্তাবিত ব্যাংক সংযুক্তিকরণ অবশ্য পুরোদস্তুর শুরু হয়ে যায়। এখনও সমাপ্ত হয়নি ঩সেই প্রক্রিয়া। কয়েক বছর ধরেই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে,  চারটি সরকারি ব্যাংক থাকবে। বাকি গুলির সংযুক্তিকরণ হবে। সেই প্রক্রিয়া ২০২৮ সালের আগেই সম্পন্ন হবে। কিন্তু বিমার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হয়েছিল দুটি অন্তত বিমা সংস্থার বেসরকারিকরণ হবে। ওরিয়েন্টাল এবং নিউ ইন্ডিয়া। কিন্তু এখন আবার সেই পুরনো প্রস্তাব ভেসে উঠেছে অর্থমন্ত্রকে। বাজেটের আগে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে বিমা সংযুক্তিকরণ নিয়ে। ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স, ওরিয়েন্টাল ইনসিওরেন্স, ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইনসিওরেন্স এবং নিউ ইন্ডিয়া অ্যাসুরেন্সের পৃথক সত্তা না রেখে একসঙ্গে একটিই সংস্থা হিসেবে করা যায় কিনা সেই চর্চা শুরু হয়েছে অর্থমন্ত্রকে। 

    ডিপার্টমেন্ট অফ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের কাছে এই নিয়ে মতামত চাওয়া হচ্ছে। যদিও অর্থমন্ত্রকে এই নিয়ে মতান্তর রয়েছে। বিশেষ করে ভ্যালুয়েশন নিয়ে। অর্থাৎ কোন সংস্থার সম্পদ কত এবং কোন কোম্পানির আওতায় কারা আসবে, তার মূল্যায়ন কীভাবে হবে? এসব  নিয়ে মতভেদের সম্ভাবনা রয়েছে। বিগত বছরগুলিতে সরকারি বিমা সংস্থাগুলিকে সরকারি অনুদানের উপর নির্ভর করতে হয়েছে। অর্থাৎ বিভিন্ন সময়ে সরকারের থেকে টাকা দিয়ে বিমা সংস্থাগুলির অ্যাসেট ভ্যালুয়েশনের ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়েছে। সব সংস্থাকে একটি সংস্থায় মিশিয়ে দিলে আবার নতুন করে অর্থ প্রদান করতে হবে। সেই পরিমাণও বেড়ে যাবে। এই চর্চার মধ্যেই বিমাকর্মী সংগঠনগুলি প্রশ্ন তুলছে, এই নয়া উদ্যোগের কারণ কী অদূর ভবিষ্যতে সরকারি বিমা সংস্থার বেসরকারিকরণ? সম্প্রতি বিমায় ১০০ শতাংশ বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। সেই সিদ্ধান্তের অর্থ হল, আগামীদিনে বিশ্বের প্রথম সারির বিমা সংস্থাগুলি ভারতের বাজারে থাকা বিমা সংস্থায় পূর্ণাঙ্গ লগ্নি করতে পারে। সেই পথ প্রশস্ত করতেই কি সরকারি বিমা সংস্থাগুলির পৃথক সত্তা অবলুপ্ত করে একটিই সংস্থায় পরিণত করার লক্ষ্য? যাতে তারপর সরকারি সংস্থাও বিদেশি লগ্নির জন্য খুলে দেওয়া? পাশাপাশি আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, সরকারের অন্যতম লক্ষ্য কর্মীছাঁটাই কিনা সেটি নিয়েও। 
  • Link to this news (বর্তমান)