জি রাম জি’র বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ পাঞ্জাবে, চাপে পড়ে আপ সরকারকে নিশানা শিবরাজের
বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সংসদে বিল পাশ করে আইন তো হয়েছে। কিন্তু ‘মনরেগা’ সরিয়ে ‘বিকশিত ভারত-জি রাম জি’ আইন প্রণয়ন নিয়ে ব্যাপক চাপে নরেন্দ্র মোদির সরকার। কংগ্রেস সাংসদ সপ্তগিরি উল্কার নেতৃত্বাধীন গ্রামোন্নয়ন সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ছ’ মাসের আগে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বিধি তৈরি করে তবেই নতুন আইন কার্যকর হবে। গ্রামোন্নয়ন সচিব শৈলেশকুমার সিংকে ডেকে কমিটির সিংহভাগ সদস্য জানিয়ে দিয়েছেন যে, আইন রূপায়নে তাড়াহুড়ো করবেন না।
আদতে কৌশলে আইনটি কার্যকর আটকাতে চায় কংগ্রেস। কৃষি আইনের মতোই সরকার যাতে এই আইনটিও প্রত্যাহার করে, সেটাই লক্ষ্য বিরোধীদের। তাই মঙ্গলবার পাঞ্জাব বিধানসভায় আম আদমি পার্টি (আপ) সরকার পাশ করল ‘জি রাম জি’ আইনের বিরুদ্ধে ‘প্রস্তাব।’ জানিয়ে দিল, পাঞ্জাবে এই আইন কার্যকর করবে না। এরই পাশাপাশি পাঞ্জাবের প্রায় ১০ লক্ষ মনরেগা শ্রমিকের প্রতিবাদী চিঠিও পাঠানো হচ্ছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে।
ফলে নতুন আইন নিয়ে নাকানিচোবানি অবস্থা কেন্দ্রের। এই পরিস্থিতিতে নতুন আইন নিয়ে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে ‘টাস্ক’ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেটি হল, এখন থেকে যেখানেই যাবেন, এই আইনের পক্ষে প্রচারের সুর চড়াতে হবে। সেই মতো ‘দায়িত্ব’ পালনে মধ্যপ্রদেশে ভোপালের বাড়িতে বসে পাঞ্জাব বিধানসভার প্রস্তাব পাশের বিরোধিতার সরব হলেন শিবরাজ।
শিবরাজ বললেন, ‘সংসদে পাশ হওয়ার পর ওই বিল আইনে পরিণত হয়ে গিয়েছে। তার বিরোধিতা অনৈতিক। অগণতান্ত্রিক। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। তাই পাঞ্জাব সরকার যা করছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। আসলে মনরেগা’য় আর্থিক অনিয়ম আড়াল করতেই আপ সরকার নতুন আইনের বিরোধিতা করছে।’ নতুন আইনটি কত ভালো, তা বোঝানোরও আপ্রাণ চেষ্টা করেন শিবরাজ। তিনি বলেন, আগে ১০০ দিন কাজ পেতেন শ্রমিকরা। এখন পাবেন ১২৫ দিন। তাছাড়া এখন অনেক জায়গাতেই মেশিন নিয়ে ঠিকাদার কাজ করে। একই কাজ বারবার দেখানো হয়। এসব নতুন আইনে হবে না। কাজ করবেন শ্রমিকই। ফলে মানুষ বেশি কাজ পাবেন।
কাজ চেয়ে ১৫ দিনের মধ্যে তা না পেলে মিলবে ভাতা। যারা কাজ করাবেন, সেই ‘রোজগার সহায়ক’দের বেতনও মিলবে সঠিক সময়ে। তার জন্য নতুন আইনে প্রশাসনিক খরচে বরাদ্দ করা হয়েছে ৯ শতাংশ। আগে ছিল ৬ শতাংশ। এখন বহু জায়গায় ঠিকাদার সংস্থাই ওই টাকা নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। নতুন আইনে তা হবে না। পঞ্চায়েতে গ্রামসভা ঠিক করবে কী কাজ হবে। ফলে
নতুন আইনে কাজের অধিকার কমছে না। বরং বাড়ছে বলেই জানান শিবরাজ। যদিও সরকার যতই সওয়াল করুক না কেন, আদতে রাজ্যগুলির বিরোধিতায় আইন কার্যকর করা নিয়ে চাপে কেন্দ্র। এই আবহে ভোপাল থেকে দিল্লিতে এসে ২ লক্ষ মনরেগা শ্রমিকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন শিবরাজ।