নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: প্রতীক্ষার অবসান। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই উদ্বোধন শিলিগুড়ি পুরসভার ‘প্ল্যাটিনাম জুবিলি’ ভবনের। যা দৃশ্যতই ‘কর্পোরেট হাউস’। এখানে মেয়রের কক্ষ ‘কাচ মহল’ হিসেবে পরিচিত। পাঁচতলা এই ভবনে বিধানসভা ও কলকাতা কর্পোরেশনের আদলে সভাকক্ষ রয়েছে। প্রায় ১৫ কোটি টাকায় নির্মীত ভবনটি মঙ্গলবার উদ্বোধন করেন মেয়র গৌতম দেব। বামফ্রন্ট পরিচালিত গত বোর্ডের অনেক সদস্য এদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি বলে অভিযোগ। এনিয়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।
২০১৯ সালে সংশ্লিষ্ট ভবনের শিলান্যাস করেন তৎকালীন মেয়র সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য। ২০২২ সালে পুরসভার ক্ষমতা দখলে করে তৃণমূল। মেয়রের চেয়ারে বসেই গৌতম দেব ওই প্রকল্পের নকশায় কিছুটা অদলবদল করে ভবন নির্মাণের কাজে হাত দেন। ভবনের অধিকাংশ নির্মাণ কাজ প্রায় বছর খানেক আগেই শেষ হয়। মেয়র, কমিশনার, সচিব সহ মেয়র পরিষদ সদস্যদের কক্ষ চালু করা হয়। মেয়রের কক্ষের একদিকে কাচের দেওয়াল। সেখান থেকে আকাশ ও শহরের একাংশ দেখা যায়।
কয়েকদিন আগে ভবনের পাঁচতলায় অত্যাধুনিক মিটিং হলের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। বিধানসভা ও কলকাতা কর্পোরেশনের সভাকক্ষের আদলে তৈরি সংশ্লিষ্ট হল ১৫০ আসন বিশিষ্ট। এতে দু’টি লিফ্ট ও একটি সিঁড়ি রয়েছে। এলইডি লাইট, সাউন্ড সিস্টেম, ফুলের টব, আলপোনায় সাজানো হয়েছে গোটা ভবন। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ভবনটির উদ্বোধন করা হয়। মেয়র বলেন, পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা খরচ করে ভবন তৈরি করা হয়েছে। পুরসভা ৭৫ বছর অতিক্রম করেছে। তাই এর নাম প্ল্যাটিনাম জুবিলি ভবন রাখা হল। এবার পুরসভায় স্থান সঙ্কুলান অনেকটাই কমবে।
এদিনের অনুষ্ঠানে বামফ্রন্ট পরিচালিত বিগত বোর্ডের সদস্যদের দেখা যায়নি। অনেকের অভিযোগ, অনুষ্ঠানে তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। মেয়র অবশ্য বলেন, বাড়িতে গিয়ে আগের বোর্ডের মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ও গঙ্গোত্রী দত্তকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছি। তা হলেও অল্প সময়ের মধ্যে এই অনুষ্ঠান করা হয়েছে। অনেককে ডাকা যায়নি। পরবর্তীতে সকলকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করা হবে।
প্রাক্তন মেয়র তথা পুরমন্ত্রী অশোকবাবু বলেন, ব্যক্তিগত কাজ থাকায় অনুষ্ঠানে যেতে পারব না বলে পুরকর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছিলাম। তবে আমাদের শহরে অনেক সমস্যা রয়েছে। সেগুলি না মিটিয়ে কর্পোরেট হাউসের মতো বিশাল ভবন নির্মাণ করা ঠিক হয়নি বলেই মনে করি। এটা বিলাসিতা ছাড়া কিছু নয়। যদিও তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য, নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই এমন কথা বলছেন অশোকবাবু। • নিজস্ব চিত্র।