নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: বাড়ির ছেলে এক গৃহবধূকে ফুসলিয়ে নিয়ে চম্পট দিয়েছে। ২৭ ডিসেম্বর ওই যুগল বেপাত্তা হওয়ার পর সোমবার রাতে যুবকের বাড়ি লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় পেট্রল বোমা। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই গ্রামের ওই ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে দীপু হাবর নামে বেপাত্তা ওই যুবকের মা সুমিত্রা হাবর, কাকা ভুবন হাবর তমলুক থানায় এফআইআর করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। বোমার বিকট আওয়াজে গোটা পাড়ার লোকজন জেগে উঠেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুকুমার দাসও রাতে ওই যুবকের বাড়িতে হাজির হন। বাড়ির গেটের একাংশ পুড়ে গিয়েছে। ওই ঘটনার এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, ময়না থানা এলাকার এক গৃহবধূর মামার বাড়ি শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাঁউরচণ্ডী গ্রামে। মামার বাড়িতেই ওই গৃহবধূ বড় হয়েছেন। ময়নায় শ্বশুরবাড়িতে স্বামী ও এক সন্তান রয়েছে ওই গৃহবধূর। খারুই গ্রামের ২৪ বছর বয়সী দীপুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীপু ফুল সাজানোর কাজ করেন। কর্মসূত্রে হায়দরাবাদে থাকেন। এক মাস আগে দীপু হায়দরাবাদ থেকে বাড়ি ফিরে আসেন। ১৫দিন আগে একবার ওই যুগল নতুন সংসার পাতার লক্ষ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। ২৬ ডিসেম্বর গ্রামে সালিশি সভা হয়। সেখানে খারুইয়ের পঞ্চায়েত সদস্যের পাশাপাশি কাঁউরচণ্ডী বুথের পঞ্চায়েত সদস্যও ছিলেন। সালিশি সভার পর ওই গৃহবধূকে শ্বশুরবাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। পরদিন অর্থাৎ ২৭ ডিসেম্বর ফের দু’জনে পালিয়ে যান।
গত ২৭ ডিসেম্বর ফের দীপু মিসিং হওয়ার পর বাড়ির লোকজন খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, ময়নার ওই বধূও নিখোঁজ হয়েছেন। এরপর দীপুর বাবা শ্রীমন্ত হাবর ও মা সুমিত্রাদেবী তমলুক থানায় গিয়ে মিসিং ডায়েরি করেন। এদিকে, কাঁউরচণ্ডী গ্রাম থেকে গূহবধূর মামার বাড়ির লোকজন দীপুর বাড়িতে গিয়ে ওই যুবতীকে খুঁজে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ। সোমবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বাড়ির সামনে বিকট আওয়াজে ঘুম ভাঙে শ্রীমন্তবাবুদের। বেরিয়ে দেখেন, গেটের সঙ্গে বাঁধা ত্রিপল দাউ দাউ করে জ্বলছে। একটি বোতলের ভেতর পেট্রল ভরে তাতে সলতে গুঁজে আগুন লাগিয়ে বাড়ি লক্ষ্য করে ছুঁড়ে মারা হয়। স্থানীয় লোকজন রাতেই ওই আগুন আয়ত্তে আনেন।
বাড়ির ছেলে অন্যের বউকে নিয়ে চম্পট দেওয়ায় এই হামলা বলে মনে করছেন দীপুর কাকা ভুবন হাবর। মঙ্গলবার তিনি তমলুক থানায় বলেন, খারুই বাজারে বেশকিছু সিসি ক্যামেরা আছে। সেইসব সিসি টিভির ফুটেজ চেক করলেই রাতে কারা হামলা চালাতে এসেছিল তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ওই যুবতীর পরিচিতরাই এই হামলা চালিয়েছে বলে আমাদের ধারণা।খারুই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সুকুমারবাবু বলেন, ওই যুবকের সঙ্গে বধূর ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে। আমরা সালিশি করে পরস্পরকে আলাদা থাকার পরামর্শ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরই ফের দু’জনে পালিয়েছে। বাড়িতে পেট্রল বোমা ছুঁড়ে মারার ঘটনার সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক আছে কি না জানি না। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করুক।-নিজস্ব চিত্র