নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: নদীয়ার তাহেরপুরে ক্রমশ বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এই অঞ্চলে একের পর এক কর্মসূচি নিচ্ছে রাজ্যের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি। শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা। মোদির অনুষ্ঠান বাতিলের পর এবার তাহেরপুরেই জনসভা করতে আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিছুদিন আগেই তাহেরপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনসভা বাতিল হয়। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার অবতরণ করতে পারেনি। ফলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য রাখতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে। এবার সেখানেই রাজনৈতিক সভা করে নির্বাচনের আগে এগিয়ে থাকতে চাইছে তৃণমূল।
তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ৯ জানুয়ারি তাহেরপুরের নেতাজি হাই স্কুল সংলগ্ন মাঠে সভা করতে আসছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনের আগে এই সভাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দক্ষিণ নদীয়া জেলা দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের কাছে কঠিন এলাকা হিসেবে পরিচিত। মতুয়া অধ্যুষিত এই অঞ্চলে বিজেপির সংগঠন তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী। একাধিক নির্বাচনে এই এলাকায় শাসক দলকে পিছিয়ে পড়তে হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে তাহেরপুর পুরসভা এখনও বামেদের দখলেই রয়েছে, যা এই এলাকার রাজনৈতিক জটিলতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
তৃণমূল নেতৃত্ব সূত্রে দাবি, আসন্ন সভায় প্রায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীর সভায় যে ভিড় হয়েছিল, তা ছাপিয়ে যাওয়াই এই সভার অন্যতম উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে। একই মাঠে সভা করার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক কৌশলেরই অঙ্গ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উদ্বাস্তু অধ্যুষিত এলাকায় নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিতর্কের আবহে বিজেপিকে কোণঠাসা করতে এই সভা গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে।
যদিও তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি চঞ্চল দেবনাথের বক্তব্য, বড় জমায়েতের জন্য উপযুক্ত মাঠের দরকার ছিল। সেই কারণেই এই জায়গা বাছা হয়েছে, অন্য কোনও দলের কর্মসূচির সঙ্গে এর যোগ নেই। এদিকে বিজেপি এই সভা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। রানাঘাটের বিজেপির মুখপাত্র সোমনাথ কর বলেন, রানাঘাটের মানুষ আগেই তৃণমূলের উপর আস্থা হারিয়েছেন। এবার রাজ্যের মানুষও মুখ ফেরাবে। ভোটের ফলেই তার প্রমাণ মিলবে।