ঘোলবাগদা হল্ট স্টেশনের কাজ শেষের পথে, চালুর অপেক্ষায় স্থানীয় বাসিন্দারা
বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, কাঁথি: এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ভগবানপুর-২ ব্লকের ঘোলবাগদায় রেলস্টশন চালু হতে চলেছে। জানুয়ারির দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় সপ্তাহে এই হল্ট স্টেশনের আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়ে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি কংক্রিটের বসার আসনও তৈরি করা হয়েছে। বসেছে পথবাতি। টিকিট কাউন্টার তৈরির কাজ শেষের পথে। পানীয় জল, শৌচালয়ের পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। স্টেশন চালু নিয়ে খুশি এলাকাবাসী। তবে স্টেশনে যাতায়াতের জন্য নির্দিষ্ট রাস্তা এখনও তৈরি হয়নি। নির্দিষ্ট রাস্তা তৈরি করতে উদ্যোগী হোক রেলদপ্তর, দাবি তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা।
দীঘা-তমলুক রেলপথে নাচিন্দা ও হেঁড়িয়ার মাঝে ঘোলবাগদা স্টেশন তৈরি হয়েছে। ভগবানপুর-২ ব্লকের বরোজ, অর্জুননগর সহ পার্শ্ববর্তী পটাশপুর-২ ব্লকের আড়গোয়াল, মথুরা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের ট্রেন ধরতে হলে হেঁড়িয়া রেলস্টেশনে যেতে হয়। কেউ যান নাচিন্দা স্টেশনে। আবার কাঁথি-৩ ব্লকের কানাইদিঘি ও কুমীরদা পঞ্চায়েত একাংশের বাসিন্দাদের নাচিন্দায় গিয়ে ট্রেন ধরতে হয়। এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, নাচিন্দা ও হেঁড়িয়ার মাঝামাঝি অংশে একটি রেলস্টেশন গড়ে তোলা হোক। এতে এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে সুবিধা হবে। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা রেলদপ্তরের কাছে এই দাবি তুলে ধরেন। বছর দুয়েক আগে রেলের তরফে সমীক্ষার পর ঘোলবাগদায় হল্ট স্টেশন গড়ার অনুমোদন দেয় রেল। জায়গা অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়। তারপর ২০২৪সালের ১মার্চ হল্ট স্টেশনের শিলান্যাস হয়। তারপর ধীরে ধীরে কাজ এগিয়েছে। এলাকার বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন আদক, সমরেন্দ্রনাথ দাস বলেন, স্টেশনটি চালু হলে এলাকার উৎপাদিত নানা সামগ্রী ট্রেনে পরিবহণে সুবিধা হবে। তবে স্টেশনে যাতায়াতের জন্য সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। পাঁউশির বাসিন্দা বিষ্ণুপদ ভুঁইয়া বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি মেনে স্টেশন তৈরি হচ্ছে। চালু হলে বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতের বহু মানুষের সুবিধা হবে।
এলাকায় রেলস্টেশন গড়ার দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে স্থানীয় ‘রেল পরিষেবা নাগরিক কমিটি’। কমিটির পক্ষে সৌমেন প্রধান বলেন, পূর্বদিকে প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। যাঁরা পাঁউশির দিক থেকে এসে ট্রেন ধরবেন, তাঁদের তো রেললাইন পারাপার করতে হবে। এতে নিরাপত্তার প্রশ্ন রয়েছে। অবশ্যই সাবওয়ে করতে হবে। স্টেশনের দু’দিকে বরোজ খাল ও ঘোলবাগদা খালের উপর দু’টি রেলব্রিজ রয়েছে। তার পাশে দু’টি ব্রিজ দরকার। ঘোলবাগদা খালের উপর ব্রিজ তৈরি হলে কুমীরদা ও কানাইদিঘি পঞ্চায়েত এলাকার মানুষের স্টেশনে যাতায়াত সুবিধা হবে। বরোজ খালের উপর একইভাবে ব্রিজ তৈরি হলে খেজুরির হেঁড়িয়া ও টিকাশি পঞ্চায়েতের একাংশের মানুষের যাতায়াত সুবিধা হবে।
ভগবানপুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, সাবওয়ে তৈরি হবে। আমরা রেলদপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছি, ইতিমধ্যে টেন্ডারের প্রক্রিয়া এগিয়ে গিয়েছে। ব্রিজগুলি রাজ্য সরকার তৈরি করবে। স্টেশনে আসার জন্য দু’টি রেলব্রিজের পাশ দিয়ে ছোট রাস্তা রয়েছে। এই স্টেশনটি মডেল হল্ট স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য একটি স্টেশনে যা যা পরিষেবা ও পরিকাঠামো থাকে এখানেও তা গড়ে তোলা হবে।-নিজস্ব চিত্র