• কনকনে শীতে মাতৃমার সামনে পলিথিন টাঙিয়ে রাত কাটাচ্ছেন রোগীর আত্মীয়রা
    বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বহরমপুর: একে হাড়কাঁপানো শীত, তার উপর রাতভর খেতে হয় মশার কামড়। এমনই পরিস্থিতিতে প্রায় ২০০মানুষ খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাচ্ছেন। ছবিটা মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগের সামনে। রোগীর আত্মীয়দের জন্য কাছেই একটি শেড থাকলেও তাতে জায়গা অপ্রতুল। তাই কেউ দু’রাত, কেউ তিন রাত ধরে পলিথিন টাঙিয়ে থাকছেন। তাতে কুয়াশার হাত থেকে রক্ষা পেলেও কনকনে শীত থেকে রেহাই নেই। বেশিরভাগ মানুষের মশা তাড়িয়েই রাত কেটে যায়। বছরের পর বছর কেটে গেলেও ছবিটা বদলায়নি।

    মেডিকেল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীর আত্মীয়দের রাত্রিবাসের জন্য মাতৃমার কাছে একটি ছাউনি আছে। সেইসঙ্গে হাসপাতালের মূল ভবনের সামনেও থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মেডিকেলের এমএসভিপি অনাদি রায়চৌধুরী বলেন, রোগীর আত্মীয়দের থাকার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু মাতৃমার সামনে থেকে কেউ সরে আসতে চান না।

    যদিও রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, মাতৃমা লাগোয়া শেডে যথেষ্ট জায়গা নেই। আবার রাতবিরেতে কোনও প্রয়োজন হলে রোগীর নাম ধরে মাইকের সাহায্যে বাড়ির লোকজনকে ডাকা হয়। কখন কার আত্মীয়ের ডাক পড়ে, তা তো কেউ বলতে পারে না। কাজেই কান খাড়া রেখে গেটের সামনেই তাঁদের রাত কাটাতে হয়।

    জেলার বিভিন্ন মহকুমা হাসপাতাল ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মাতৃমায় আসন্নপ্রসবা ও প্রসূতিদের স্থানান্তরিত করা হয়। ফলে এই বিভাগে চাপ ক্রমশই বাড়ছে। চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ না থাকলেও মাতৃমার সামনে রোগীর আত্মীয়দের থাকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ বাড়ছে। কান্দি মহকুমার সালার থেকে এসেছেন মালতী রায়। তাঁর পুত্রবধূ বৃহস্পতিবার থেকে মাতৃমায় ভর্তি রয়েছেন। মালতীদেবী বলেন, খোলা আকাশের নীচে দু’রাত জেগে রয়েছি। আর ক’দিন থাকতে হবে জানি না। শীত আর মশার দাপট সহ্য করা যাচ্ছে না।

    খড়গ্রাম ব্লকের তুরিগ্রামের মিরসাদ আলির স্ত্রী মুনজেরা খাতুন তিনদিন আগে ভর্তি হয়েছেন। মিরসাদ আলি বলেন, ডাক্তার এখনও তারিখ দেয়নি। রাতে ঠান্ডায় কাঁপছি আর মশা তাড়াচ্ছি। এভাবে তো আমিই অসুস্থ হয়ে পড়ব। দিনের পর দিন এমন অবস্থা চলে এলেও কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)