• মিটার ঘর অক্ষত! অন্তর্ঘাতের শঙ্কা ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের
    বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • বিশ্বজিৎ মাইতি, বরানগর: অগ্নিকাণ্ডের রাতে বাজার কমিটি নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষী ডিউটিতে থাকলেও ছিলেন না পুরসভার নাইট গার্ড। ওই নিরাপত্তারক্ষীর দাবি, মিটার ঘরের কাছে পটকা ফাটার মতো আওয়াজ হয়। তারপরেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ড কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বাজারের প্রায় সব দোকান পুড়ে গেলেও মিটার ঘরটি অক্ষত রয়েছে। চোখের জল মুছতে মুছতে ব্যবসায়ীরা বলেন, ২৫ বছর আগে পুড়ে খাক হয়েছিল এই বাজার। সেবার অগ্নিকাণ্ডের পিছনে ছিল গভীর ষড়যন্ত্র। এবারও হয়তো তেমন কোনও ঘটনা ঘটেছে। সেই আশঙ্কা করেই ব্যবসায়ীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, আশপাশের এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে। এদিন বিকেলে ফরেন্সিক টিম ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া বাজার ঘুরে দেখে। তাঁরা নমুনাও সংগ্রহ করেন।

    দাদা রবীন দে’র আলু-পিঁয়াজের দোকান ছিল এই বাজারে। তাঁর বোন কণিকা দাস বলেন, রাতেই আগুনের খবর পেয়ে দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি। ভোর হতেই যাদবপুর থেকে চলে এসেছি। দাদার সংসার এই দোকানের উপর নির্ভরশীল। সব শেষ হয়ে গেল। তাঁর প্রশ্ন, এবারও কি আগের মতো চক্রান্ত করে আগুন লাগানো হল?

    শিশির সিংহের তিন ভাইয়ের দোকান রয়েছে বাজারে। বর্ষীয়ান শিশিরবাবু বাজার কমিটির উপদেষ্টা। পুড়ে যাওয়া দোকানের উপর বসে ছাই সরিয়ে কিছু খুঁজছিলেন তিনি। ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইলে স্তব্ধ হয়ে যান। কয়েক মিনিট পর নিজেই বলে ওঠেন, ২০০১ সালে অগ্নিকাণ্ডের পর দোকান থেকে পোড়া বাঁশ ও কাঠ পেয়েছিলাম। এবার ছাই ছাড়া কিছু নেই। হাতে এক মুঠো ছাই নিয়ে বলেন, দেখুন সাবানগুলি কেমন ছাই হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি দোকানে লক্ষ লক্ষ টাকার সামগ্রী মজুত ছিল। এখন সব ছাই। 

    কী কারণে আগুন লাগল? তাঁর উত্তর, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগেনি। পুরসভার নাইটগার্ড ছিল না। আমাদের নিরাপত্তা রক্ষীই শর্ট সার্কিটের কথা বলেছে। অথচ, মিটার ঘর অক্ষত। আগুন দেখার পর মিটার ঘরে মেইন সুইচ বন্ধ করার সুযোগ থাকলেও তা করা হয়নি। ষড়যন্ত্রের আশঙ্কায় আমরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। নিরাপত্তারক্ষী বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, আমি দেখেছি শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে। আমিই বাজারের সবাইকে ফোন করেছি।
  • Link to this news (বর্তমান)