• কাকদ্বীপের একটি বুথ থেকেই শুনানিতে ডাক ৪০০ ভোটারকে, উদ্বিগ্ন গ্রামবাসীরা
    বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: একটি বুথ থেকেই শুনানিতে ডাক পেলেন প্রায় ৪০০ ভোটার। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়েছে কাকদ্বীপে। এমনকি, শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপের প্রতাপাদিত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৫ নম্বর বুথে ভোটার রয়েছেন ১,৩৭৪ জন। তাঁদের মধ্যে ৩৮৩ জনকে শুনানির জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে কমিশন। এই নোটিশগুলি বাড়িতে পৌঁছোতেই সমস্যায় পড়েছেন গ্রামবাসীরা। কারণ এই গ্রামের প্রচুর বাসিন্দা ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। এমনকি বেশ কয়েকজন বিদেশেও বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন। তাঁরা এই নোটিশ পাওয়ার পর তড়িঘড়ি বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিযোগ, শুধু শুনানিতে হাজিরা দিতে গিয়ে তাঁদের বিপুল টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। কারও ক্ষেত্রে এই খরচ ৫০ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। কারও ক্ষেত্রে নাকি তা এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। তাঁদের দাবি, এসআইআরের শুনানিতে হাজিরা দিতে বাড়ি ফেরায় কোম্পানিগুলি কয়েক মাসের বেতন পর্যন্ত কেটে নিয়েছে। বাধ্য হয়ে ঋণ করে বাড়িতে আসতে হয়েছে। 

    ওই বুথ এলাকার বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক বাবু সরকার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওমানে কাজ করছি। ভোটার তালিকায় বাবার ও আমার নাম রয়েছে। কিন্তু ২০০২ সালের তালিকায় আমার নাম ছিল না। তবে আমার কাছে পাসপোর্ট রয়েছে। তারপরেও আমাকে শুনানিতে ডাকা হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার পর বাড়ি ফিরতে হয়েছে। প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও দু’মাসের বেতন ছেড়ে দিয়ে আসতে হয়েছে। কোম্পানি থেকে ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে এসেছি। জানি না ফিরে গিয়ে কী দেখব। বেশি দেরি হলে হয়তো কাজটাই চলে যাবে। খুব চিন্তায় আছি।’

    ৮৫ নম্বর বুথের বিএলও মণীন্দ্রনাথ দাস বলেন, ‘যাঁদের লিংক পাওয়া যায়নি, তাঁদের আন-ম্যাপিং করা হয়েছে। তবে এই কাজ খুব তাড়াহুড়োর মধ্যে করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে কি না, এখনই তা বলা সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন কারণে ৩৮৩ জনকে আন-ম্যাপিং করা হয়েছে। তাঁদের সবাইকেই শুনানিতে ডাকা হয়েছে।’

    এই বুথের বিএলএ-২ সঞ্জয় দাস বলেন, ‘এই বুথে আগেই মৃত ও স্থানান্তরিত যাঁরা, তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এই সংখ্যা ৪৬। যাঁদের শুনানিতে ডাকা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অনেকের বাবা বা মায়ের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় রয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন তাঁদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে জানা নেই। প্রায় প্রতিদিনই বহু মানুষ বাড়িতে এসে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করছেন। তাঁদের কোনও উত্তর দিতে পারছি না। সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’

    বিজেপি নেতা অভিজিৎ দাস বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। তারা নিয়ম মেনেই এই কাজ করে থাকে। এক্ষেত্রেও পরিশুদ্ধ ভোটার তালিকা তৈরি করা তাদের লক্ষ্য।’
  • Link to this news (বর্তমান)